দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই এমন কথা শুনলে যে কেও বিস্মিত হবেন। কারণ মাত্র এক আঙুলের পরীক্ষা বলে দেবে অন্যদের চোখে আপনার চেহারা কতটা সুন্দর? এও কী সম্ভব?
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা কসমেটিক সার্জেন ডাক্তার মার্ক হোমস বলেছেন, ‘এক আঙুলের এই পরীক্ষাটি একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য। চিকিৎসা শাস্ত্রেও সমজাতীয় পরীক্ষার প্রচলন রয়েছে। এর নাম রিকেটস ই-লাইন টেস্ট।’
আপনার নিজের চেহারা সম্পর্কে আপনার ধারণা যেটিই হোক না কেনো, অন্যদের চোখে আপনি ঠিক কেমন, তা কিন্তু বুঝে ওঠা বেশ কঠিন কাজ। কেও আপনাকে সামনা সামনি হয়তো সুদর্শন বলে প্রশংসা করলেও, তা কতটা সঠিক প্রশংসা, তা বোঝা খুব সহজ নয়। সেই স্থানে ‘বিউটি অ্যান্ড আগলিনেস আইডেন্টিফিকেশন মেথড’ নামে প্রচলিত এক আঙুলের একটি সহজ পরীক্ষা এই বিষয়ে আপনার দ্বিধা পুরোপুরি দূর করার সহজ উপায় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উপরের পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বাঁ দিকের নারী সুন্দরী, ডান দিকের নারীটি ততোটা সুন্দরী নন
আসলে কী ধরনের এই পরীক্ষা?
বছর কয়েক আগে চীনা সোশ্যাল মিডিয়া ‘উইবো’-তে জনপ্রিয় হয় এই পরীক্ষাটি। বহু নামজাদা চীনা সেলিব্রিটি ‘উইবো’-তে নিজেদের ‘আঙুল পরীক্ষা’র ছবি আপলোড করা শুরু করেন। দেখা যায়, কেও এই পরীক্ষায় ‘পাশ’ করেছেন, আবার কেও ‘ফেল’ করেছেন। অর্থাৎ পরীক্ষা অনুযায়ী, কারোর মুখমণ্ডল সুন্দর বলে চিহ্নিত হচ্ছে, আবার কারো অসুন্দর। আস্তে আস্তে পৃথিবীর অন্যান্য অংশেও এই পরীক্ষা রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কীভাবে করতে হবে এই পরীক্ষাটি?
# প্রথমে নিজের ডান হাতের তর্জনী লম্বালম্বিভাবে সোজা করে ধরুন।
# এরপর আঙুলের ডগাটিকে নিজের থুতনিতে ছোঁয়ান।
# এখন আঙুলের অন্য প্রান্তটি ঠেকান আপনার নাকের ডগায়।
# এবার ভালো করে খেয়াল করুন, ঠোঁটজোড়া আপনার আঙুলকে স্পর্শ করছে কি না। যদি আপনার ঠোঁট আঙুলকে ছুঁয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন আপনি দেখতে সুন্দর, আর যদি তা না হয়, তাহলে আপনি ততটা সুন্দর নন।
এই পরীক্ষার কী আদতেও বৈজ্ঞানিক কোনও ভিত্তি রয়েছে?
অর্থাৎ সত্যিই কি এই পরীক্ষা নিশ্চিতভাবে বলে দিতে পারে, কে সুন্দর, আর কে অসুন্দর। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা কসমেটিক সার্জেন ডাক্তার মার্ক হোমস বলেছেন, ‘সৌন্দর্যের ধারণা একান্তই ব্যক্তিরুচির উপর নির্ভরশীল। আমি যাঁকে সুন্দর মনে করছি, আর এক জনের চোখে তিনি হয়তো সুন্দর না-ও হতে পারেন। তবে কসমেটিক চিকিৎসা শাস্ত্রে মুখের ডান ও বাম পাশের সাম্য, বা লম্বালম্বি অথবা পাশাপাশি মুখের দৈর্ঘ্যকে সৌন্দর্যের মাপকাঠি বলে মনে করা হয়ে থাকে। এই পরীক্ষা মূলত সেই সমস্ত মাপের একটা নির্ধারক হিসেবে কাজ করতে পারে। সেই হিসেবে বলা যায় যে, এক আঙুলের এই পরীক্ষা একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য। চিকিৎসা শাস্ত্রেও সমজাতীয় পরীক্ষার প্রচলন রয়েছে। যাকে বলা হয় রিকেটস ই-লাইন টেস্ট।’
তবে এই পরীক্ষায় ‘ফেল’ করলেই মুষড়ে পড়ার কিছুই নেই। ‘এই পরীক্ষা কোনও মানুষের সৌন্দর্য সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হতে পারে না। সে কারণে এই পরীক্ষায় পাশ করলেই নিজেকে প্রচন্ড সুদর্শন ভেবে বসার যেমন কারণ নেই, ঠিক তেমনিভাবে ফেল করলেও হতাশায় ভোগার কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি না;’ এমন মন্তব্য করেছেন এই কসমেটিক সার্জেন বিশেষজ্ঞ মার্ক হোমস।