দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়া অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে এই প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়া খুব একটা স্বাস্থ্যকর বিষয় নয়। সে কারণে এবার আসছে এর বিকল্প হিসেবে ‘ওহো’!
প্লাস্টিকের বোতলে পানি খাওয়ার অপকারটা জানেন প্রায় সকলেই। তবে জানা সত্বেও প্রয়োজনের তাগিদে ব্যবহারও করতে হচ্ছে। বেড়াতে যাওয়া হোক বা ঘরের কাজে, অফিস হোক কিংবা রাস্তা-ঘাটে প্লাস্টিকের পানির বোতল ছাড়া কোনো উপায় নেই।
এক সমীক্ষা বলছে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক তৈরি হয়। তারমধ্যে ৮৮ লক্ষ টন প্লাস্টিক আবার সাগরে গিয়ে মেশে। যা সামুদ্রিক প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। আবার ক্ষতি করে বাস্তুতন্ত্রেরও। নষ্ট করছে পরিবেশের ভারসাম্যও। এই ভাবনাটাই মাথায় খেলছিলো তাঁদের। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের স্কিপিং রকস ল্যাবে গবেষণা করতে গিয়ে তাই রড্রিগো গার্সিয়া, পিয়েরি পাসলিয়র ও গুইলামি কৌচে বানিয়ে ফেললেন ‘ওহো’। কী এই ‘ওহো’? রড্রিগো বলেছেন, ‘ওহো’ দেখতে অনেকটা পানিের একটা বড় বুদবুদের মতো। প্লাস্টির বোতলের বদলে এই পানির বুদবুদগুলি নিয়েই বের হওয়া যাবে রাস্তাঘাটে। তেষ্টা পেলে বুদবুদগুলো খেয়ে ফেললেই পানির তৃষ্ণা মিটে যাবে! এতে একদিকে যেমন দূষণও রোধ হবে, অপরদিকে শরীরে ক্ষতিকর পদার্থও অনেক কম প্রবেশ করবে।
কী দিয়ে তৈরি হয়েছে এই ‘ওহো’?
আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, ‘ওহো’ হাতে নিলে অনেকটা জেলির মতো নরম মনে হবে। ওহো-তে রয়েছে সোডিয়াম অ্যালগিনেট দিয়ে তৈরি দু’টি পাতলা পর্দা। সামুদ্রিক ব্রাউন অ্যালগি ও ক্যালসিয়াম কার্বোনেট দিয়ে তৈরি করা হয় এই সোডিয়াম অ্যালগিনেট। এই পাতলা পর্দার মধ্যেই থাকে তরল পানীয়। সম্পূর্ণ বুদবুদটাকেই জেলিফিকেশন করা হয়েছে। এই সময় পানিের মধ্যে এডিবল জেলিং এজেন্টও দেওয়া হয়েছে। এমনিতে ‘ওহো’ খেতে সাধারণ পানির মতোই লাগবে। তবে ইচ্ছে মতো এতে নানা রকম ফ্লেভারও যোগ করা সম্ভব।
পিয়েরি জানিয়েছেন, কোথাও গেলে খুব সহজেই সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া যাবে এই পানির বুদবুদ। তেষ্টা পেলে পুরোটিই খেয়ে ফেলা যাবে। প্রতি ‘ওহো’য় থাকবে ২৫০ মিলিলিটার পানি। পাশাপাশি ‘ওহো’ তৈরির খরচও প্লাস্টিক বোতল হতে অনেক কম বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পিয়েরি পসলিয়রের আশা প্রকাশ করেছেন যে, খুব শীঘ্রই ‘ওহো’ বাজারে আসার মাধ্যমে প্লাস্টিক বোতলের বিপুল দূষণের হাত হতে বিশ্বকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।