দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ক্রমান্বয়ে টিকটিকি মানবে পরিণত হচ্ছে ২ বছরের শিশু শ্যামা! ছবিটি দেখেই বুঝা যাচ্ছে, শিশুটির নির্মম এবং অসহায়ত্বের কল্পকথা।
শুধু দেখতে কুরুচিপূর্ণই নয়, সেইসঙ্গে অনেক বেশি ব্যাথায় কাৎরাতে হয় ২ বছরের এই ছোট্ট শিশুটিকে। প্রতিদিন এই শিশুর শরীরের চামড়া খসে পড়ে নতুন চামড়া উঠছে যে কারণে তাকে বেশ কষ্ট করতে হয়। ২ বছর বয়সী ভারতীয় এই শিশু শ্যামা ল্যামেলার আইচথোসিস নামে এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এটি চামড়ার এমন একটি ইনফেকশন যা প্রতি ৬ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১ জনের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই দুর্বলতাযুক্ত চামড়ার অবস্থার কারণে শিশুটির সারা শরীরের উপর ছিদ্রযুক্ত স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়েছে। যে কারণে শিশুটির ত্বক কঠিন হয়ে যায়। এতে করে যন্ত্রণাদায়ক ব্যথার সৃষ্টি হয় তার। যে কারণে তার হাড়ে সংক্রমণের সম্ভাবনাও বেড়ে গেছে।
Lamellar ichthyosis হলো একটি বিরল জেনেটিক স্কিণ ডিসর্ডার। জন্মের সময় এই রোগের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। প্রভাবিত শিশুদের শরীরের উপর একটি collodion ঝিল্লি চামড়া দেখা যায়। একটি চকচকে মোমবাতি-প্রান্তিক আকারের ত্বক শিশুদের শরীরে দেখা যায়। এই রোগের রোগীদের শরীরে বেশির ভাগ চামড়া আচ্ছাদন আকারে থাকে।
বলা হয়েছে, এই অবস্থাটি একটি অটোসোমাল ব্যাকসেসি জেনেটিক ডিসঅর্ডার, যার অর্থ হলো ত্রুটিযুক্ত জিন একটি অটোসোমে অবস্থিত। মা-বাবা উভয়ের মধ্যে এই জীনগত বৈশিষ্ট্য থাকলে বাচ্চার শরীরে এই ডিসঅর্ডারের সৃষ্টি হতে পারে। Lamellar ichthyosis সংক্রমণে আক্রান্ত শিশুদের শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়। এদের অত্যাধিক হারে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চুলের ক্ষতিও হতে পারে (আল্পসিয়া), অস্বাভাবিকভাবে তৈরি নাখুড়া ও টেনলেট (ডাইথ্রোপি), ঘাম হওয়ার হুমকি থাকে (হাইপোইড্রোসিস), তাপের বৃদ্ধি সংবেদনশীলতা, চোখের সমস্যা ও হাতের জয়েন্টগুলোতে নমনীয়তা নাও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জি নিউজে বলা হয়েছে, দুর্ভাগ্যবশত বর্তমানে এই অবস্থার কোন প্রতিকার পৃথিবীতে নেই, তবে নিয়মিত ময়শ্চারাইজার, চোখের ড্রপ ইত্যাদি প্রয়োগ করে উপসর্গগুলি আপাতত উপশম হতে পারে। শ্যামার মা ২২ বছর বয়সী রশনি বানু এবং শ্যামার বাবা ২৫ বছরের সাব্বির আলী দিল্লির একটি বস্তিতে বসবাস করছেন। তারা তাদের একমাত্র শিশুর জন্য মসজিদ, মন্দির সব স্থান দোওয়া করেছেন। একের পর এক চিকিৎসক দেখাচ্ছেন, তবুও কোন ফল হচ্ছে না।