দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সরকার ঈদের ছুটি ৬ দিন করতে যাচ্ছে। আসন্ন ঈদুল আজহা থেকেই এটি কার্যকর হতে পারে। যদিও বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বলতে হবে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সত্যিই সুখবর। এখন থেকে ঈদের ছুটি ৬ দিন করার পরিকল্পনা রয়েছে বর্তমান সরকারের। আসন্ন ঈদুল আজহা হতেই এটি কার্যকর হতে পারে। বর্তমানে ঈদে সরকারি কর্মচারীরা ঈদে ছুটি পান ৩ দিন। চাকরিজীবীদের ঈদে স্বস্তিতে বাড়ি পৌঁছাতে ছুটি বাড়ানোর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঈদের ছুটি বাড়ানোর একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। সরকারি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম এ তথ্য দিয়েছে।
বলা হয়েছে, এই প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে এবার ঈদের ছুটি শুরু হবে ৩০ আগস্ট বুধবার হতে এবং শেষ হবে ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার। তবে এর মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটি ঈদের ছুটি হিসেবে কার্যকর হবে। সব মিলিয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা এবার ঈদের ছুটি পাবেন ৬ দিন (৩০ আগস্ট হতে ৪ সেপ্টেম্বর)। এই ৬ দিন সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ঈদের এই বাড়তি ছুটি কর্মচারীদের ঐচ্ছিক ছুটি হতে কেটে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই ঈদে ছুটি বাড়ানোর এক প্রস্তাব সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত আসার পরই এটি সর্বোচ্চ ফোরামে উপস্থাপিত হবে। এখানে অনুমোদন পেলে ছুটির আদেশ জারি করা হবে। না হলে বিদ্যমান নিয়মেই ছুটি বহাল থাকবে।
তিনি আরও বলেছেন, সরকার ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে বছরের নির্ধারিত ছুটি একই থাকবে। বাড়তি ছুটি কর্মচারীদের ঐচ্ছিক ছুটি হতে কেটে নেওয়া হবে। অর্থাৎ শুধু ঐচ্ছিক ছুটির সঙ্গে ঈদের ছুটি সমন্বয় করা হবে।
সংবাদ মাধ্যমকে সংশ্লিষ্টরা জানান, সব ঠিকঠাক থাকলে এবার ঈদুল আজহা পালন হবে ২ সেপ্টেম্বর শনিবার। ঈদের দিন ও তার আগের দিন পড়ছে সাপ্তাহিক ছুটি। যে কারণে বিদ্যমান নিয়মে এবার ৩ দিন ঈদের ছুটি থাকলে এর দু’দিনই পড়ছে সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে। বাড়তি কোনো ছুটিই পাচ্ছেন না সরকারি চাকরিজীবীরা। চাকরিজীবীরা বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা হতে পারবেন। আবার সোমবারে অফিস খোলা থাকায় ঈদের পরের দিন রবিবার ঢাকামুখী হতে হবে। এতে একসঙ্গে রাস্তাঘাট, ফেরি, লঞ্চ, রেলের ওপর ব্যাপক চাপ বাড়বে। মানুষের দুর্ভোগের আর শেষ থাকবে না। এমনকি গ্রামের সড়কও বর্তমানে বর্ষার কারণে বেহাল অবস্থা। তারপর এতো চাপ মোকাবেলা করা প্রশাসনের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ারও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। যে কারণে চাকরিজীবীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে ঈদের ছুটি বাড়ানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ঈদে ছুটি বাড়ানোর দাবি সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের। ২০১০ সালে ঈদুল ফিতরে সরকারি ছুটি ৩ দিনের পরিবর্তে ৫ দিন করার একটি প্রস্তাব দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে পরে এটি নাকচ হয়ে যায়। গত ঈদুল ফিতরের ছুটিও ৬ দিন করার একটি প্রস্তাব তৈরি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এতে সম্মতি দেন; তবে ওই সময় সংসদে বাজেট অধিবেশন থাকায় ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাবটি আর কার্যকর হয়নি। এবার সরকারি কর্মচারীদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে ও ঈদে যাতে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছর অফিস-আদালত ১৫৯ দিন বন্ধ থাকে। এর মধ্যে রয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি ১০৪ দিন। অন্যান্য ছুটি ৫৫ দিন।