দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন বা মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি যাকে বলা হয় এমএনপি চালুর উদ্যোগ এখনও সফল হয়নি। ২০১২ সালে প্রথম উদ্যোগ নিলেও ২০১৩ সালের ১৩ জুন মুঠোফোন অপারেটরদের এই ব্যবস্থা চালু করার একটি নির্দেশনাও দিয়েছিল বিটিআরসি।
মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন কিংবা মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি চালুর উদ্যোগ বহু আগেই নিয়েছে বিটিআরসি। এই সুবিধা চালু হলে একজন গ্রাহক তার মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন করার সুবিধা পাবেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এটি চালু হয়নি। এ বিষয়ে নীতিমালাতে কিছু অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, এমএনপি সম্পর্কে এখনও দেশের মোবাইল গ্রাহকরা অবগত নন। এটি চালু হলে টেলিটক ও সিটিসেলের মতো ছোট অপারেটরা গ্রাহক হারাতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কলরেটের সর্বনিম্ন হার ঠিক না করে এমএনপি চালু করলে গ্রাহক সেবার সাশ্রয়ের বদলে খরচ আরও বাড়তে পারে।
জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়া সহ বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশে মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তনের সুযোগ বিদ্যমান। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানেও এই সুবিধাটি রয়েছে।
এমএনপি চালু করার জন্য সরকার ২০১২ সালে প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিল। এরপর ২০১৩ সালের ১৩ জুন মুঠোফোন অপারেটরদের এই ব্যবস্থা চালু করার একটি নির্দেশনাও দেয় বিটিআরসি। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে হবে। ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর হতে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই নিয়ে অনলাইনে গ্রাহকদের মতামতও নেয় বিটিআরসি।
দেশের অপারেটরগুলো এ বিষয়ে পারদর্শী না হওয়ার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ৫টি প্রতিষ্ঠানকে এইকাজে মনোনীত করে। এগুলো হলো রিভ নাম্বার লি., গ্রিনটেক ইন্টারন্যাশনাল, ইনফোজিলিয়ন বিডি, টেলিটেক কনসোর্টিয়াম ও ব্রাজিল বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদনও দিয়েছে।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা এমএনপির বিপক্ষে নই। তবে আমরা চাই এই বিষয়ে আগে গণশুনানি হোক। এমএনপি নিয়ে গ্রাহকরা ভালোভাবে জানুক। এজন্য সরকারের আরও প্রচারণা প্রয়োজন।’
সংবাদ মাধ্যমকে তিনি আরও বলেছেন, ‘এমএনপি চালু হলে দেশে টেলিকম অপারেটরগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতার বাড়বে এটি ঠিক। গ্রাহক ধরে রাখার জন্য তারা বিভিন্ন অফার এবং সুযোগ সুবিধা বাড়াবে। তবে ছোট অপারেটরদের কাছে এমএনপি শঙ্কার কারণও হতে পারে। কেনোনা, এসব অপারেটরের গ্রাহকরা তুলনামূলক বেশি সুবিধা পাওয়ার আসায় অন্য অপারেটরের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন।’
নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমএনপিতে একজন গ্রাহককে অন্য অপারেটরে যেতে হলে ৩০ টাকা চার্জ দিতে হবে। এর পাশাপাশি নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করলে ১০০ টাকার ভ্যাটও দিতে হবে। তবে এই ভ্যাট গ্রাহক দেবে নাকি অপারেটর বহন করবে সে বিষয়ে বিটিআরসি পরিস্কারভাবে কিছুই বলেনি। বিষয়গুলো পরিস্কার হওয়া যেমন দরকার, তেমনি প্রচারণাও করা দরকার বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।