দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সবার মনে আছে দানা মাঝির কথা। হতভাগ্য স্ত্রীর লাশ ঘাড়ে করে নিয়ে আসার ছবি সংবাদ মাধ্যমে আসার পর বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। অর্থের অভাবে কোনো যানবাহনে উঠতে না পেরে লাশ কাঁধে তুলে নেন। সেই দানা মাঝি এখন বিরাট ধনী!
মাত্র এক বছর আগের ঘটনা। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে গোটা ভারত নয়, বলা যায় গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলেছিল হতভাগ্য এক স্বামীর মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি। অর্থের অভাবে নিজের স্ত্রীর লাশ ঘাড়ে করে বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার পেছনে পেছনে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটতে থাকে তার কিশোরী কন্যাও। তবে ৬০ কিমি দূরে অবস্থিত গ্রামের পথ পুরোটা হেঁটে যেতে হয়নি তাকে। ১০ কিমি পথ পেরনোর পরেই এক সাংবাদিকের চোখে পড়ে বিষয়টি। তারপর তিনি উচ্চ মহলে ফোন করে লাশটি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে। লাশ ঘাড়ে দানা মাঝির ওই ছবিটি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়ে যায়। মানুষের হৃদয়ে বিষয়টি নাড়া দেয়।
একজন মানুষের এই চরম সংগ্রামের কাহিনী শুনে বহু মানুষের হৃদয়ই কেঁদেছিল। তারপর যা হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলেই গেছে সবই। এরপর কাতারসহ বিশ্বের অনেকগুলো দেশ থেকে তাকে সাহায্য করা হয়।
ঠিক এক বছর পূর্বে ২৪ আগস্ট মারা গিয়েছিলেন দানা মাঝির স্ত্রী। সেই কপর্দকহীন মানুষটি এক বছরের মধ্যেই হয়ে গিয়েছেন এক বিরাট ধনী। আজ তার ব্যাঙ্কে জমা অর্থের পরিমাণ হলো ৩৭ লক্ষ টাকা! তিন মেয়েকেই ভুবনেশ্বরের স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের নিদারুণ ট্র্যাজেডির পরে বহু মানুষ এবং সংস্থা এগিয়ে এসেছে তাকে সাহায্য করতে। বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী একাই ৯ লক্ষ টাকার চেক দেন দানা মাঝিকে। পান আরও অনেক সাহায্য। ওড়িশা সরকার তাকে ইন্দিরা নিবাস যোজনার অধীনে একটি বাড়ির ব্যবস্থাও করে দেয়। মেয়েদের শিক্ষার সকল দায়িত্ব নেয় কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মাস দুই হলো আবার বিয়েও করেছেন দানা মাঝি। এখন তিনি যেনো এক বিরাট ধনি! মানুষ কখনও ফকির, কখনও ধনি! সবই সৃষ্টিকর্তার মর্জি অনুযায়ী হয়, সেটিই বাস্তব কথা।