দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এমন অমানবিক দৃশ্য বোধহয় আর চোখে পড়েনি। হিউম্যান রাইটস বলেছে, মায়ানমারে রাখাইনে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১০টি এলাকা।
হিউম্যান রাইটস বলেছে, আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কমপক্ষে ১০টি এলাকা। ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই অগ্নিকাণ্ডের চিহ্ন দেখা গেছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনী দমনপীড়ন চালানোর সময় যে পরিমাণ বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল- এবার তার চেয়েও অনেক বেশি এলাকা পুড়ে গেছে বলে জানানো হয়েছে হিউম্যান রাইটস এর রিপোর্টে।
রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেখানকার সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের পর পাওয়া স্যাটেলাইট ছবিতে এসব প্রমাণ পেয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। আগুনে পোড়া ওই এলাকা পরিদর্শনে যেতে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের যেতে দিতেও দাবি করেছে এই সংগঠনটি। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
স্থানীয় অধিবাসী ও অধিকারকর্মীরা নিরস্ত্র নারী, শিশু, পুরুষের ওপর বাছবিচারহীনভাবে গুলি চালানোর জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে দেশটির সেনাবাহিনীকে। বলা হচ্ছে, তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে সব। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলেছে, গত সপ্তাহে শুরু হওয়া ওই সহিংসতায় প্রায় ১০০ মানুষ নিহত হয়েছে।
মিয়ানমার সরকার বলছে এক রকম ও রোহিঙ্গার বলছে আরেক রকম। সরকার বলছে যে, সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইকালে বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থি সন্ত্রাসীরা। অপরদিকে রোহিঙ্গারা দায়ী করেছে সেনাবাহিনীকে। সেনাবাহিনী বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমার সরকারের উচিত ওই অগ্নিকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করে এর কারণ উদঘাটনে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষককে সেখানে যেতে অনুমতি দেওয়া।
তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেখানে কোনো মানবাধিকার কর্মীকে যেতে দিচ্ছে না। দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর হামলা করছে বলে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে। সব মিলিয়ে মিয়ানমারে চলছে এক চরমতম মানবিক বিপর্যয়। যার শিকার হচ্ছেন আরাকান রাজ্যের হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমরা। নারী-শিশুও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। জাতিসংঘ নিন্দা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।