দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ১৫ হাজার বিজ্ঞানী জানালেন মহাবিপদের মুখোমুখি মানবসভ্যতা! এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঘটে যেতে পারে অকল্পনীয় কোনো বিপর্যয়।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, এক খোলা চিঠির মাধ্যমে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন সারাবিশ্বের অন্তত ১৫ হাজারের বেশি বিজ্ঞানী। সম্প্রতি ইউনিয়ন অব কনসার্নড সায়েন্টিস্টসের পক্ষ হতে প্রকাশিত ওই খোলা চিঠিতে জানানো হয় যে, শুরু হতে পৃথিবীর পরিবেশকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে আসছে মানুষই। এভাবে নিজের অস্তিত্বকেই ধীরে ধীরে সংকটের মুখে ফেলেছে একমাত্র মানবসভ্যতা। তবে বর্তমান সময় সবচেয়ে হুমকির মুখে রয়েছে এই মানুষই।
জানা গেছে, ওই খোলা চিঠিটিতে বিশ্বের ১৮৪ দেশের ১৫ হাজার ৩৬৪ জন বিজ্ঞানী স্বাক্ষর করেছেন। ওই চিঠিটিতে ২৫ বছরের পুরোনো ১ হাজার ৭০০ বিজ্ঞানীর স্বাক্ষরও রয়েছে। ১৯৯২ সালের চেয়ে মানবসভ্যতা বর্তমানে অনেক বেশি সংকটের মুখে রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই সংকট যদি এখনই মোকাবিলা না করা না হয়, তাহলে অকল্পনীয় দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে আগামী দিনগুলোতে।
বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘বায়োসায়েন্সে’ উইলিয়াম রিপল নামের এক মার্কিন বিজ্ঞানী বলেছেন, ‘মানবসভ্যতাকে এবার দ্বিতীয়বারের মতো নোটিশ দিলাম… আমরা ভৌগোলিক এবং জনসংখ্যার বিবেচনায় প্রাকৃতিক সম্পদের অসম ব্যবহারে লাগাম না টানতে পারার কারণে নিজেদের ভবিষ্যৎকেই বিপদগ্রস্ত করছি। জনসংখ্যার লাগামছাড়া বৃদ্ধি পরিবেশগত এবং সামাজিক হুমকির কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আর এসব বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে আমলে না আনার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার, গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দায়ী করা হয়েছে। এই সতর্কতা মোটেও খাটো করে দেখা যাবে না বলে উল্লেখ করেন বিজ্ঞানী উইলিয়াম রিপল। তিনি বলেছেন, বিজ্ঞানীদের এই খোলা চিঠির কারণে মানুষ আরও সচেতন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিগত ২৫ বছরে পৃথিবীতে বহু পরিবর্তন এসেছে, যা শঙ্কার মধ্যে ফেলেছে মূলত মানবসভ্যতাকে। বিজ্ঞানীরা এমন কিছু পরিবর্তন তুলে ধরেছেন তাদের ওই খোলা চিঠিতে। সেগুলো হলো:
# সারাবিশ্বে মাথাপিছু পানযোগ্য পানির পরিমাণ ২৬ শতাংশ কমে গেছে।
# সারা বিশ্বজুড়ে কার্বন নির্গমন এবং তাপমাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা মানবসভ্যতার জন্য ক্ষতিকর।
# মহাসাগরগুলোতে ‘মৃত অঞ্চল’ এর পরিমাণ ৭৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অঞ্চলগুলোতে দূষণ এবং অক্সিজেনের অভাবে কোনো প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না।
# গত ২৫ বছরে সারাবিশ্বে অন্ততপক্ষে ৩০ কোটি একর বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে।
# ১৯৯২ সালের পর হতে জনসংখ্যা অন্তত ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
# সার্বিকভাবে স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ, উভচর, পাখি ও মাছের সংখ্যা ২৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন।