দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৭ হওয়ার গৌরবময় খেতাব জিতেছেন ভারতের মানুসি চিল্লার। এখন তিনি কী হতে চান? চিকিৎসক না নায়িকা, কী হবেন বিশ্বসেরা সুন্দরী ২০১৭-এর খেতাব জয়ী মানুসি?
অনেক প্রতীক্ষার পালা শেষ করে অবশেষে চীনের সানইয়া শহরে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হলো মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৭ প্রতিযোগিতা। সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে অংশ নেওয়া ১১৮ প্রতিযোগীর মধ্যে বিশ্বসেরা সুন্দরী ২০১৭-এর খেতাব জয় করে নিয়েছেন ভারতের মানুসি চিল্লার। ভারতের ইতিহাসে ১৯৬৬ সালে রীতা ফারিয়াকে দিয়ে শুরু হয়ে এরপর ১৯৯৪ সালে ঐশ্বরিয়া রায়, ১৯৯৭ সালে ডিয়ানা হেডেন, ১৯৯৯ সালে যুক্তামূখী ও সর্বশেষ ২০০০ সালে প্রিয়াংকা চোপড়া এই মুকুট পাওয়া পর দীর্ঘ ১৭ বছর পর আবার ২০১৭ সালে এসে বিশ্বসেরা সুন্দরী তালিকায় ষষ্ঠবারের মতো জয়ের মুকুট ধারণ করে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছেন মানুসি চিল্লার।
ভারতের উত্তর প্রদেশের অন্তর্গত হরিয়ানায় ১৯৯৭ সালের ১৪ মে মাসে জন্ম নেন মানুসি। মা-বাবা দুজনেই পেশায় চিকিৎসক। বাবা ডা. মিত্র বসু শিল্লার ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে গবেষণারত ও মা ডা. নীলম শিল্লার নিউরোকেমিস্ট্রির বিভাগীয় প্রধান এবং সহকারী অধ্যাপিকা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত। মানুসি দিল্লির সেন্ট থমাস স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে সোনিপাতের ভগত ফুল সিং গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ফর উইমেনে চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যয়নরত।
জানা গেছে, খুব ছোটবেলা হতেই নাচের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে মানুসির, নাচের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মানুসির মা। আর তখন থেকেই নাচের শুরু। বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী রাজা, রাধা এবং কৌশল্যা রেড্ডির আনুগত্যে ‘কুচিপুরী’ নাচের তালিম নেন মানুসি। নাচের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় নাট্যশালাতেও উপস্থিতি রয়েছে মানুসির।
মানুসি পরিবার নিয়ে যখন সেবা আর জ্ঞানচর্চার আবরণে বেষ্টিত, সেই বলয় হতে নিজের মধ্যে কিছুটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করাটাও কোনো অংশে কম চ্যালেঞ্জের ছিল না! চিকিৎসাবিদ্যার মতো চ্যালেঞ্জিং ক্যারিয়ারের পাশাপাশি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তিনি মেধা ও সৌন্দর্যের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। মানুসিকে সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন তাঁরই পরিবার। মানুসির ভাষ্যমতে, তাঁর পরিবারের প্রেরণাতেই এতদূর আসা সম্ভব হয়েছে তাঁরপক্ষে।
জানা গেছে, মানুসির প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দারুণভাবে প্রকাশ পায় এবারের প্রতিযোগিতার আসরে করা চূড়ান্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে। বিচারক প্যানেল হতে তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হয়, ‘তোমার মতে কোন পেশাকে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেওয়া উচিত এবং কেনো?’ প্রতি উত্তরে মানুসি বলেন, ‘আমার মতে, একজন মাকে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেওয়া উচিত। শুধু টাকার অঙ্কে তা পরিমাপযোগ্য নয়; বরংচ সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্মান একজন মায়েরই একান্ত প্রাপ্য। আমার মা আমার সবচেয়ে বড় প্রেরণা।’
২৫ জুন ২০১৭ সালে ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া-২০১৭’ প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে মিস ফটোজেনিক হয়ে নিজের জন্মস্থান হরিয়ানাকে তুলে ধরেন, অত:পর স্বপ্নযাত্রার পথে অনেকটা পথ হেঁটে আজকের এই জয়মুকুট অর্জন করা সম্ভব হয় ভারতের মানুসি চিল্লার।
উল্লেখ্য, ২০ বছর বয়সী এই তরুণী শুধু বিশ্বসেরা সুন্দরী হয়েই ক্ষান্ত থাকতে চান না, বরং আরও স্বপ্ন দেখেন একজন সফল কার্ডিয়াক সার্জন হওয়ার ও সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের। ঐশ্বরিয়া রাই কিংবা প্রিয়াংকা চোপড়াদের মতো নায়িকা হয়ে বলিউডপাড়ায় যোগ দেবেন, নাকি একজন সফল চিকিৎসক হিসেবেই নিজের প্রধান পরিচয় গড়বেন এই বিশ্বসুন্দরী, সেটি হয়তো সময়ই বলে দেবে।