দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক স্কুলের অভিনব পদ্ধতি। যে স্কুলে ভর্তির সময় এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে যা শুনলে আপনিও বিস্মিত হবেন। যেমন ওই স্কুলে ভর্তি হলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না। আবার নাবালক অবস্থায় উপার্জনও করতে দেওয়া যাবে না!
সত্যিই এমন আজব স্কুল হয়তো আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ছেলে-মেয়েদের ওই স্কুলে ভর্তি করাতে দুটি শর্ত দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকরা এই দুটি শর্ত মানলে তবেই তাদের ছেলে-মেয়েদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।
আর ওই শর্ত দুটি হলো:
(১) সাবালক না হলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না।
(২) নাবালক অবস্থায় উপার্জন করতে পাঠানো যাবে না।
ভাবছেন এমন আজব স্কুলটি কোথায় অবস্থিত। এই স্কুলটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত। জেলার জোতঘনশ্যাম নীলমণি হাইস্কুল নামে একটি স্কুলে ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করাতে হলে অভিভাবকদের মানতে হবে এই শর্ত দুটি।
এই স্কুলটিতে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৫৬ জন। বছরের শুরুতে অন্যান্য স্কুলের মতো ওই স্কুলেও বিভিন্ন শ্রেণীতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই ভর্তি ফর্মের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে পৃথক একটি অঙ্গীকারপত্র। সেখানে অভিভাবকরা সম্মতি দিলে তবেই তাদের ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করানো হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্কুলের এই অভিনব উদ্যোগের প্রশংসাও করেছেন দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া এবং জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামাপদ পাত্র। এমন উদ্যোগের কারণে বাল্যবিয়ে ও শিশুশ্রমের প্রবণতা কমতে পারে বলে মত দিয়েছেন।
স্কুলে ভর্তি হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না মেয়েদের এমন উদ্যোগে সচেতন অভিভাবকরাও স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। বাল্যবিবাহ রোধ এবং শিশুশ্রমের খগড় হতে জাতিকে উদ্ধার করতে এমন একটি উদ্যোগ কাজে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নির্মল দাসকর্মকার বলেন, সাম্প্রতিক সময় পশ্চিমবঙ্গে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া ও নাবালক বয়সেই রোজগার করতে পাঠানোর প্রবণতা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এই উদ্যোগের কারণে সেই প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বিষয়টিকে পজিটিভলি দেখা হবে সেটিই তার প্রত্যাশা।