দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আজ (শুক্রবার) শুরু হয়েছে। ভোরে ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে।
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আম বয়ানের মধ্যদিয়ে আজ (শুক্রবার) শুরু হয়েছে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন- ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা। আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন হয়েছে।
যদিও ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে নিয়ে এক বড় ধরনের সমালোচনা শুরু হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি মিমাংসা হয়েছে। মাওলানা সাদ এবার ইজতেমায় যাচ্ছেন না সে বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করেছে। তিনি কাকরাইলেই থাকবেন এবং সুবিধা মতো ভারতে ফিরে যাবেন।
আজ (১২ জানুয়ারি) শুরু হওয়া এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে পরশু (রবিবার) ১৪ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে। প্রথম পর্বের আগত মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে কয়েকটি খিত্তায় বিভক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক খিত্তায় জিম্মাদার নিয়োজিত থাকবেন একজন করে। আগত তাবলিগ কর্মীরা প্রত্যেক খিত্তায় নিয়োজিত জিম্মাদারের কাছে পরামর্শও গ্রহণ করবেন বিভিন্ন বিষয়ে।
প্রথম পর্বে অংশ নেবেন ঢাকা, শেরপুর, নারায়ণগঞ্জ, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, চট্টগ্রাম, সিলেট, নড়াইল, লক্ষ্মীপুর, মাদারীপুর, ভোলা, মাগুরা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পঞ্চগড়, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর ও জামালপুর জেলার মুসল্লিরা।
ইজতেমায় আগত মুসল্লির সুবিধার্থে গভীর নলকূপ হতে পানি সরবরাহ, স্থায়ী টয়লেট এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তুরাগ নদে ভাসমান সেতু ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ইজতেমা ময়দানে জায়গা কম থাকায় ২০১৬ সাল হতে ৬৪ জেলার মুসল্লিদের ৩২ জেলা করে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এই ৩২ জেলার মুসল্লিদের মধ্যেও আবার ১৬ জেলা করে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অর্থাৎ এক বছর পরপর ৩২ জেলার মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রথম পর্বে অংশ নেবেন ১৬ জেলার মুসল্লি এবং দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন ১৬ জেলার মুসল্লি। বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় এই বছরও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।
সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিংয়ে পুলিশের জন্য ওয়াচ টাওয়ার ছাড়াও সিভিল বেশে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ইজতেমা মাঠের ভেতর খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান করবেন। আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, গাজীপুর জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, আনসার এবং ভিডিপি সদস্যের ৫টি কন্ট্রোল রুম স্থাপনা করা হয়েছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও বিদেশী মেহমানদের জন্য ইজতেমা মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে টিন দিয়ে কামরা নির্মাণ করা হয়েছে। পশ্চিমে তুরাগ পাড়ে গ্যাস সুবিধাসহ রান্নার চুলা এবং রন্ধনশালা নির্মাণ করা হয়েছে বিদেশী অতিথির জন্য। যানজট নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক কাজ করবে ট্রাফিক পুলিশ এবং কমিউনিটি পুলিশ। অপরদিকে বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, গ্যাস, চিকিৎসাসেবা বাস্তবায়ন এবং সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রশাসন ও পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ হতে ব্যাপক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।
১ম পর্বের মোনাজাত শেষে চার দিন পর ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। ২১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এবছরের বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা।