দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ ১০ বছর পর বেনজির হত্যার দায় স্বীকার করেছে তালেবান নেতা আবু মনসুর আসিম মুফতি নুর ওয়ালি’র লেখা এক বইতে। সেখানেই বেনজির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে সংগঠনটি।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ১০ বছর পর হত্যার দায় স্বীকার করলো তালেবান। তালেবান নেতা আবু মনসুর আসিম মুফতি নুর ওয়ালি’র লেখা এক বইয়ে বেনজির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে সংগঠনটি।
তালেবান নেতা আবু মনসূর এর লেখা “ইনকিলাব মেহসুদ সাউথ ওয়াজিরিস্তান-ফ্রম ব্রিটিশ রাজ টু অ্যামেরিকান ইমপেরিয়ালিসম” নামে বইটি গত বছরের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশ হতে প্রকাশিত হয় এই বইটি। এই বইতেই বেনজির হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করে তালেবান।
বইটিতে তালেবান নেতা জানান, বিলাল ওরফে সাইদ ও ইকরামুল্লাহ নামের দুই ব্যক্তিকে বেনজির হত্যার উদ্দেশ্যে “আত্মঘাতী” মিশন দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। বিলাল প্রথমে তার সঙ্গে থাকা পিস্তল দিয়ে বেনজিরকে গুলি করে। এতেকরে গলায় গুলিবিদ্ধ হন বেনজির ভুট্টো। পরে বিলাল তার শরীরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা বোমার জ্যাকেটটির বিস্মোরণ ঘটায়”।
তবে ইকরামুল্লাহ পরবর্তীতে নিজের বোমার জ্যাকেটে বিস্ফোরণ ঘটায়নি বলে তিনি এখনও বেঁচে রয়েছেন। ৫৮৮ পাতার এই বইটি গত রবিবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। এই বইতে আরও জানানো হয়, সে সময়ের তালেবান নেতা বায়তুল্লাহ মেহসুদ পুরো হত্যা পরিকল্পনার নেতৃত্ব দিয়েছেন।
অপরদিকে ২০০৭ সালের অক্টোবরে বেনজির ভুট্টোর আরেক মিছিলে বোমা হামলার কথাও স্বীকার করা হয়েছে এই বইতে। করাচির সে মিছিলে দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর আঘাতে নিহত হয় অন্তত ১৪০ জন পাকিস্তানি নাগরিক। তবে সেবার প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন বেনজির ভুট্টো।
জানা যায়, চারদিকে আলোড়ন সৃষ্টি করা এই বইতে ভুট্টো হত্যাকান্ডে পাকিস্তানি নিরাপত্তাবাহিনীর দূর্বলতাও প্রকাশ করা হয়েছে। বইতে লেখা হয় যে, “করাচিতে ভুট্টোর ওপর হামলার পর রাওয়ালপিণ্ডিতে বেনজিরের মিছিলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখতে ব্যর্থ হয় পাকিস্তানি নিরাপত্তাবাহিনী। যে কারণে বেনজির ভুট্টোর অনেক কাছাকাছি যেতে পারে ওই হামলাকারীরা”।
হিন্দুস্তান টাইমস্ এর খবরে বলা হয়, ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বেনজির হত্যাকাণ্ডের পর সে সময় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফের প্রশাসন তেহরিক-ই-তালেবানকে এর জন্য দায়ী করেন। তবে এতোদিন পর্যন্ত সংগঠনটি এই বিষয়ে বলা যায় নীরব ছিল।