দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ট্রাম্পের নতুন অভিবাসন নীতি শেষ পর্যন্ত বুমেরাং হতে চলেছে। নতুন অভিবাসন নীতির কারণে ফার্স্টলেডিকেই যুক্তরাষ্ট্র হতে বের করে দিতে হবে!
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অভিবাসন নীতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকেই সবার আগে দেশ হতে বের করে দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোতে অবৈধ অভিবাসী উচ্ছেদ অভিযানের সমালোচনায় এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নিরা। নতুন অভিবাসন নীতির আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে মার্কিন অভিবাসন অ্যাটর্নিরা এমন কথা বলেছেন।
আইনজীবীদের যুক্তি হলো, মার্কিন অভিবাসন নীতি ভঙ্গ করেছেন মেলানিয়া নিজেই। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আগে মেলানিয়ার অতীত জীবনের কোনো তথ্যই অভিবাসন বিভাগের নিকটে নেই। পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে পরে ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেন মেলানিয়া। মডেল হিসেবে অবৈধভাবে কাজ করে তিনি হাজার হাজার ডলার আয়ও করেছেন। ১৯৯০-এর দশকে যুগোস্লাভিয়া হতে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন মেলানিয়া। সেই সময় মডেল হিসেবে কাজ করতেন মেলানিয়া।
আইনজীবীরা আরও বলেছেন, ৯০-এর দশকে মেলানিয়া যখন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, তখন যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকতেন ফার্স্টলেডি মেলানিয়াকে অভিবাসন নীতি লঙ্ঘনের দায়ে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হতো।
মেলানিয়ার ভিসার নথিপত্র ঘেঁটে সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালে পর্যটন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসেই মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন মেলানিয়া। বৈধভাবে কাজের অনুমতি পাওয়ার আগে ৭ সপ্তাহে তিনি ২০ হাজার ডলারেরও বেশি আয় করেন। ২০০১ সালে স্থায়ী নাগরিত্বের জন্য আবেদন করেন তিনি। ৫ বছর পর ২০০৬ সালে গ্রিন কার্ড পান মেলানিয়া। তবে এর পূর্বে তিনি যতো টাকা আয় করেছেন তার কোনো হিসাব দেননি।
দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এর এক খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে নেওয়া ট্রাম্পের নতুন অভিবাসন নীতির ব্যাখ্যায় আইনজীবীরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আসা কোনো ব্যক্তি যদি কোনো জালিয়াতি বা ভিসা সম্পর্কিত যেকোনো বিষয়ে ইচ্ছাকৃত মিথ্যা তথ্য প্রদানের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেশ হতে বের করে দেবেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। কোনো পর্যটকের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আগে ভিসা নেওয়া জরুরি।
অবশ্যই ভিসায় অন্তত ৩ মাসের কর্মপরিকল্পনা থাকতে হবে। এই সময়ের মধ্যে ওই ব্যক্তি যা করবেন যেমন মার্কিন কোনো নাগরিককে বিয়ে, পড়াশোনা কিংবা কোনো চাকরি করা, তা যদি মার্কিন দূতাবাসের সাক্ষাৎকারে পূর্বেই উল্লেখ করতে ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে তিনি ইচ্ছাকৃত মিথ্যা বলেছেন বলে ধরে নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে যেকোনো অবস্থায় তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নতুন এই নীতির আওতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়াকেই সবার আগে দেশে পাঠিয়ে দিতে হবে বলে মনে করছেন দেশটির আইনজ্ঞরা।
তাছাড়া গত বছরের ২৫ জানুয়ারিতে অভিবাসন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশ জারি করেন, তা কার্যকর হলেও মেলানিয়াও সম্ভবত বিতাড়নের মুখে পড়তেন। নির্বাহী আদেশে বলা হয় যে, নাগরিক হতে ইচ্ছুক যে সব অভিবাসী তাদের অতীত জীবনের হলফনামা গোপন করেছেন- তাদেরকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য করা হবে।