দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ময়মনসিংহের ভালুকায় এক ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণে কুয়েটের এক শিক্ষার্থী নিহত ও তিন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ণ ইউনিয়ে ভর্তি ছিলো।
এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার খাস সাতবাড়ি গ্রামের শাহীন মিয়া গত পরশু বুধবার দিবাগতরাতে মারা যায়। তাকে গতকাল রাতে নিজ বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। এই সময় কুয়েটের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকরা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন। শিক্ষার্থীরা কুয়েটের ২টি বাসযোগে সিরাজগঞ্জে এসে উপস্থিত হন।
জানা গেছে, শাহীনরা দুই ভাই এক বোন। ছোট বোন পড়াশোনা করছে। শাহীনের বাবা নেই, মা আছেন। তার বড় ভাই অনেক কষ্ট করে তাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিলো। সেই স্বপ্ন ধুলিস্যাত হয়ে গেছে। পুরো গ্রাম জুড়ে শোকের মাতম। কুয়েটের শিক্ষক ও সহপাঠি শিক্ষার্থীদের দেখে শাহীনের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় নামাজে জানাজা ও পরে রাত ১২টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়।
শাহীনের দাফনের পর শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন (রাত দেড়টার দিকে) আরেক শিক্ষার্থী নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ফিটগ্রামের মো. হাফিজুর রহমান (২৩) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। কুয়েটের এই দলকি সিরাজগঞ্জ হতে ভোরে ঢাকা মেডিক্যালে আসেন। এই সময় তারা জানতে পান আজ (শুক্রবার সকালে) অপর শিক্ষার্থী মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার দীপ্ত সরকার (২৩) মারা গেছেন।
সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে, বর্তমানে কুয়েটের দুটি বাসভর্তি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অবস্থান করছেন।
এদিকে এই বিস্ফোরণে মৃত্যুর পর যারা দায়ি তাদের ব্যাপারে প্রশাসন কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। এই বিষয়ে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াও প্রায় নীরব। এই নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ ক্ষোভ রয়েছে। তারা বলেছেন, যাদের কারণে কুয়েটের প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের জীবন প্রদীপ নিভে গেলো তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, খুলনার প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় ইন্টার্নি কোর্স করছিলেন। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ভয়াবহ গ্যাস বিস্ফোরণ ঘটলে তাৎক্ষণাত এক জনের মৃত্যু ঘটে। পরে তিন জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।