দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে নানা রকম হোটেল রয়েছে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য এইসব হোটেলগুলো করা হয় নানাভাবে। শীতে জমবে বরফে এবং গ্রীষ্মে ভাসবে পানিতে আজ এমন এক হোটেলের গল্প রয়েছে!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, সুইডেনে তৈরি করা হচ্ছে এমন একটি হোটেল ও স্পা। যে হোটেলটি গ্রীষ্মকালে পানিতে ভেসে থাকবে। অপরদিকে শীতে বরফে জমে যাবে। হোটেলটি এক কথায় অপরূপ সৌন্দর্য হবে।
জানা গেছে, ‘দ্য আর্কটিক বাথ’ নামে এই হোটেলটির অবস্থান সুইডেনের স্ক্যান্ডিনেভিয়ার উত্তরাঞ্চলে লিউলে নদীর ওপর। হোটেলটির অবস্থান এমনভাবে হবে যে সুমেরুর প্রভা কিংবা নর্দার্ন লাইট উপভোগের জন্য খুবই চমকপ্রদ হবে।
এই হোটেলটির বৃত্তাকার গঠন প্রকৃতি এর ভেতরের পরিবেশ এবং অতিথিদের সুরক্ষিত রাখতেও সহায়তা করবে। এটি এমন এক স্বর্গ যেখানে অতিথিরা আয়েশ করে স্থানীয় শীতল পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন সবকিছু ভুলে।
এই হোটেলটিতে থাকছে ৬টি বিলাসবহুল কক্ষ। প্রতিটি কক্ষ হতেই উপভোগ করা যাবে শীত-গ্রীষ্মের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। হোটেলটি নদীর তীরের সঙ্গে মজবুত করে বেঁধে রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যাতে করে স্রোতের সঙ্গে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকে।
‘দ্য আর্কটিক বাথ’ হোটেলের খোলা ছাদে রয়েছে সূর্যস্নান, বরফ স্নান ও নর্দার্ন লাইট এবং তারা ভরা আকাশ উপভোগের ব্যবস্থাও থাকবে। এখানে বরফ স্নানের ব্যবস্থাটি অবশ্য দুর্বলচিত্তের মানুষের জন্য নয়, যারা সবলচিত্তের মানুষ কেবলমাত্র তারাই এই বরফ স্নানের সুযোগটি কাজে লাগাতে পারবে।
তবে ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রার এই বরফশীতল পানি উপভোগ না করাই ভালো। এটি বাদ দিলেও তেমন কোনো সমস্যা নেই, উপভোগ করার জন্য সূর্যস্নান ও উষ্ণ স্পার ব্যবস্থা তো সব সময়ই থাকছে। অনেককেই দেখা যায় হিমশীতল পানিতে গোসল করে চলে যান গরম গরম এক গোসল সারতে- এমন ব্যবস্থাও থাকবে এই হোটেলটিতে।
শীতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ‘দ্য আর্কটিক বাথ’ সত্যিই একটি অদ্বিতীয় স্থান হবে সেটি হলফ করে বলা যায়। এই হোটেল নির্মাণের পেছনের কলাকুশলীরা যথাসম্ভব সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন পর্যটকদের জন্য।
সংবাদ মাধ্যমকে নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত জোহান কাউপ্পি বলেছেন, জীবনে নতুন কিছু উপভোগের চমৎকার একটি স্থান হবে এই হোটেলটি। এর চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নকল করার কোনো প্রয়োজন হবে না।
হোটেলটির নকশাকার বার্তিল হার্সট্রম বলেছেন, সুইডেনের প্রাচীন লগ-শিপিং ঐতিহ্য হতে এই হোটেলটির ধারণা নেওয়া হয়েছে। ২০ শতকের দিকে পানিপথে সুইডেনের বিভিন্ন স্থানে গাছের গুঁড়ি পরিবহন করা হতো।
বার্তিল হার্সট্রম আরও বলেছেন, ‘শৈশবের স্মৃতি মনে করেই হোটেলটির নকশা তৈরি করা হয়েছে। তাই ফেলে আসা যুগের প্রতীক হিসেবে কাজ করবে এই হোটেলটি।’
২০১৭ সালে এই হোটেলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ না হওয়ায় এটি এখনও উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের মাঝামাঝিতে শুরু হবে এই হোটেলের কার্যক্রম।
হোটেলটি চালু হওয়ার পর যে কেও চাইলেই ৬ মাস আগেই রুমের জন্য অগ্রিম বুকিং দিতে পারবেন। অবকাশকালীন সময় যে কেও ঘুরে আসতে পারেন এই দৃষ্টিনন্দন হোটেলটিতে। অবসর সময় অত্যন্ত ভালো কাটবে সেটি প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়।