দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই গবেষণার মাধ্যমে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসে। তবে এবার গবেষকরা এমন একটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন যা মানুষকে সত্যিই বিস্মিত করেছে। গবেষকরা বলেছেন, ছাগলের নাকি মানুষের গোমড়া মুখ পছন্দ নয়!
এবার ছাগলের সামনে হাজির করতে হবে মি. বিন কিংবা থ্রি টুজেসের মতো চরিত্রদের। কারণ হলো ছাগলের নাকি মানুষের গোমড়া মুখ পছন্দ নয়! গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে এমন একটি চমকপ্রদ খবর দিয়েছেন।
তবে এটা ঠিক গোমড়া মুখো কেওই পছন্দ করেন না। তাহলে ছাগলই বা কেনো করবেন। গৃহপালিত পশুর মধ্যে ছাগল সাধারণত মানুষের খুব কাছাকাছি বসবাস করেন। তাই মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্কও অন্যান্য পশুদের তুলনায় একটু বেশিই।
আমরা জানি পেঁচার মুখে হাসি থাকে না। পেঁচা সব সময় মুখ গোমড়া করে থাকে। তবে এবার পেঁচা নয়, মানুষের গোমড়া মুখ নাকি ছাগলও পছন্দ করে না। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক এমন বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছেন।
রয়েল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক তথ্যে বলা হয়, বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন যে মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বা হাবভাব ছাগলরা খুব ভালোই বুঝতে পারে।
ছাগলের সাথে গবেষক অ্যালান ম্যাকএলিগোট
শুধু যে বুঝতে পারে তাই নয়, গবেষকদের তথ্য বলছে যে, মানুষের রাগী-রাগী অভিব্যক্তির চেয়ে হাসিমাখা বা প্রফুল্ল মুখের দিকেই ছাগলরা বেশি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। অর্থাৎ মানুষদের গোমড়া তাদের মোটেও পছন্দ নয়!
গবেষণাটি পরিচালনার সময় নমুনা হিসেবে ব্যবহৃত ছাগলের সামনে একই ব্যক্তির কিছু ছবি টাঙানো হয়। এইসব ছবির মধ্যে ব্যক্তির রাগান্বিত মুখভঙ্গি এবং হাসিমাখা প্রফুল্ল মুখের ছবিও পৃথক পৃথকভাবে টাঙানো হয়।
আর তখন দেখা যায়, রাগী-রাগী ছবির থেকে হাসিমাখা মুখের ছবির দিকেই বেশি আকৃষ্ট হয় ছাগল। তখন ওই ছবিটির সঙ্গেই অপেক্ষাকৃত বেশি সময় কাটায় ছাগল।
এই গবেষণা হতেই গবেষকরা সিদ্ধান্তে আসেন যে, কুকুর বা ঘোড়ার মতো পোষা প্রাণীগুলোই যে শুধু মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বুঝতে পারে তা নয়। ছাগল বা অন্যান্য প্রাণীরাও মানুষের মুখের হাবভাব খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে রয়েল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত লেখাটির সহ-লেখক লন্ডন ইউনিভার্সিটির ড. এলান ম্যাকএলিগট বলেছেন যে, মানুষের মুখ দেখে যে প্রাণীরাও মানুষের আবেগকে বুঝতে পারে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা।
আগে মনে করা হতো শুধু পোষা প্রাণী অর্থাৎ কুকুর বা ঘোড়ার মতো প্রাণীরাই মানুষের আবেগ বা অভিব্যক্তি ভালো টের পায়।
ছাগল দিয়ে এই নিরীক্ষার পর এখন বলা হচ্ছে যে, শুধু কুকুর বা ঘোড়াই নয় বরং গৃহপালিত সকল প্রাণী মানুষের আবেগ ও অভিব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে সক্ষম। বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়, এই বিষয়ে গবেষণার পর পশু-পাখি সম্পর্কে এবার নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হলো বলে মনে করা হচ্ছে।