দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘রাজার ঘরে যে ধন রয়েছে, আমার (চড়ুই) ঘরেও সেই ধন রয়েছে’ কলিকালের চড়ুই পাখির সেই প্রবাদবাক্য বাস্তবে রূপ নিলো আজকের এই জামানায়। রাজা ও চড়ুই পাখির দেখা পাওয়া গেছে রাজধানীর দক্ষিণ মান্ডা এলাকাতে।
৭৫ বছর বয়সী গরিব সাজেদার চার মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়েছেন বাড়ির মালিক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ট্রেজার) জাকির হোসেন।
তিনি বলেছেন, প্রতিদিনই রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা প্লাস্টিকের বোতলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বস্তায় ভরে ঘরে রাখেন মা সাজেদা এবং মেয়ে আমেনা। এক পর্যায়ে ভাঙারির জিনিসপত্র দিয়ে তারা দুই ঘরই ভরে ফেলেছেন। সে জন্য তাদের ঘরের বাইরেই ঘুমাতে হতো।
এভাবেই এক মাস কেটে গেলে তাদের কাছে ঘর ভাড়ার টাকা চাওয়া হলো। তবে তারা গড়িমসি করতে থাকেন। এভাবেই কাটে আরও প্রায় ২ মাস। গত কয়েক দিন আগেই ভাড়া চাওয়া হলে মেয়ের বাড়ি টাকা আনতে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। এরপর তারা সেখানে গিয়ে আর ফেরেননি।
বাড়ির মালিক ধরেই নিয়েছিলেন তারা বাড়িভাড়া দিতে পারবে না বলেই আর ফিরবে না। এইজন্য বাড়ির মালিক এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সাজেদা বেগমের ঘর থেকে বস্তার স্তূপ সরিয়ে বাইরে ফাঁকা জায়গায় রাখতে থাকেন।
কিন্তু একটি বস্তা অনেক ভারি ছিল। পরে টোকাইরা বস্তা খুলে কাপড়ের ভাঁজে দেখতে পায় টাকা এবং কয়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয় । পুলিশ এসে প্রায় দেড় বস্তা এক-দুই টাকার নোট এবং বিপুল পরিমাণ কয়েন উদ্ধার করে। গণনা করে পাওয়া যায় ১ লাখ ৮ হাজার ৬৬০ টাকা এবং ৮৮ কেজি কয়েন।
তিনি আরও জানান যে, এই টাকা ও কয়েন গণনা করতে ৬ থেকে ৭ জন মানুষের সারাদিন লেগে যায়। পরে পুলিশ সাজেদা ও মেয়ে আমেনাকে তার আরেক মেয়ে নাজমার বাড়ি হতে উদ্ধার করে।
সাজেদা বেগম পুলিশকে বলেছেন, ১২ তারিখে বাড়ি ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে এতোদিন তারা আসতে পারেননি। তাদের অবর্তমানে ঘরের তালা ভেঙে টাকার বস্তা, মালপত্র বের করা বাড়িওয়ালার মোটেও উচিত হয়নি। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে আমার জমানো ভিক্ষার টাকা।
এই বিষয়ে মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বলেন, এই টাকার মালিক ভিক্ষুক বৃদ্ধা এবং তার মেয়ে। আমরা এই টাকা মা-মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়েছি।