দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি ভ্রমণের সঙ্গে ভোজনের সম্পর্ক চিরদিনের। কোথাও ভ্রমণে গিয়ে সেখানকার খাবার চেখে না দেখলে ভ্রমণটাই কেমন যেনো অপূর্ণ থেকে যায়। তাই বিশ্বজুড়ে ভ্রমণে পথখাবার সম্পর্কে আজ একটি প্রতিবেদন।
কেও প্যারিস থেকে ঘুরে এসেছে তবে সেখানকার ‘ক্রেপে’ খায়নি বা হংকংয়ে গিয়ে ‘এগ ওয়াফেল’ না খেয়েই ফিরে এসেছেন এমন ঘটনা ঘটলে বলতে হবে তিনি সত্যিই দুর্ভাগা পর্যটক! তেমনি জ্যামাইকা ভ্রমণে গেলে কেও যদি সেখানকার ‘জার্ক চিকেন’ না খেয়েই ফিরে আসেন তাহলে তাকে বোকা পর্যটক হিসেবে আখ্যা দেওয়া যাবে।
আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কিছু অসাধারণ পথখাবারের পরিচিতি তুলে ধরা হলো। খাবারগুলোয় প্রতীয়মান সে দেশের স্বাদ, বৈশিষ্ট্য এবং ঐতিহ্যগতভাবে।
বান মি
অপরদিকে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিতে পাওয়া যাবে এই ‘বান মি’ নামক এই পথখাবারটি। এটি হলো রুটির সহজাত। বান মি খাবারটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ফ্রেঞ্চদের উপনিবেশেরই ফসল। এতে রয়েছে পশ্চিম ও পূর্বের খাবারের মিশেলও। গ্রিল করা মিটবল ও অন্যান্য উপকরণে পূর্ণ থাকে এই বান মি ব্রেড। সেখানে বাড়তি দেওয়া থাকে কলিজা, শসার ফালি, গাজরের আঁচার, ধনেপাতা, মুলাকুচি ও মেয়নিজ। বিভিন্ন দেশে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই বান মি খাবারটি।
চোরিপান
চোরিপান কথাটি যেনো শুনতে কেমন লাগে। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে পাওয়া যাবে এই ‘চোরিপান’। এটি প্রকৃতপক্ষে সসেজ স্যান্ডউইচ। এটি একাধারে চিলি, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, পেরু, বলিভিয়া ও ভেনেজুয়েলার জনপ্রিয় একটি খাবার। গরু বা শূকরের মাংসের গ্রিল করা সসেজ-আঠালো ব্রেডের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে থাকে চিমিচুরি সসও।
ভেলপুরি
ভেলপুরি কিন্তু আমাদের দেশেও রয়েছে। কিন্তু সেটি একেবারেই আলাদা। মুম্বাইয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্ট্রিটফুডের নামই হলো এই ভেলপুরি। ভারতের অন্যান্য অংশেও খুব চলে এই ভেলপুরি খাবারটি। তবে এতে সবজি, মসলা এবং চাটনি দেওয়া হয়। হালকা মিষ্টি, লবণ, টক ও মসলার স্বাদ পাওয়া যায় এতে। শহুরে রাস্তা বা সমুদ্র সৈকতে, উভয় জায়গায় পাওয়া যায় এই ভেলপুরি।
আরিপাস
আরিপাস পাওয়া যায় কলম্বিয়ার বোগোটায়। সকালের নাশতা হিসেবে আরিপাসের নাকি বিকল্প নেই। তবে কলম্বিয়ানরা দুপুরের স্ন্যাক্স হিসেবেও খেয়ে থাকেন এই খাবারটি। এই খাবারে থাকে চিজ, বাটার, ডিম, কনডেন্সড মিল্ক ও পেঁয়াজের তৈরি এক ধরনের সস, যার নাম হলো ‘হোগাও’।
দুরুম
‘দুরুম’ হলো ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত একটি স্ট্রিট ফুড। দুরুম বলতে বোঝায় রোল। পাতলা এক ধরনের রুটির মধ্যে অনেক ধরনের উপকরণ পেঁচানো থাকে। রোলের ভেতরে সাধারণত ভেড়ার মাংসের মসলাপূর্ণ কাবাবও থাকে। তবে মুরগি এবং গরুর দুরুমও পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় পেঁয়াজ, টমেটো, শসা ও লেটুসকুচি। পরিবেশন করা হয় হট সস ও হারবাল দেওয়া দই সহকারে। জার্মানিতেও দুরুম একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় স্ট্রিটফুড।
রউজিয়া মো
চীনের পথে-পথে এর দেখতে পাওয়া যাবে এই ‘রউজিয়া মো’ খাবারটি। এটিকে পৃথিবীর প্রাচীনতম স্যান্ডউইচের মধ্যে একটি বলা হয়ে থাকে। প্রায় ২ হাজার বছর ধরে মানুষ খায় এই খাবারটি। রউজিয়া মো তৈরিতে প্রচুর পরিমাণে মাংস এবং মসলা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এতে শূকরের মাংস দেওয়া হয়। তবে মুসলমানদের জন্য গরুর মাংসের রউজিয়া মো পাওয়া যায়। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পথখাবারটির বহুল জনপ্রিয় একটি খাবার।
সুপ্পলি
রোমের ব্যাপক জনপ্রিয় একটি স্ট্রিটফুড হলো এই ‘সুপ্পলি’। বলের মতো দেখতে এই খাবারের ভেতরে মোজ্জারেলা চিজ দেওয়া হয়। তবে মুরগির মাংসও ব্যবহৃত হয় এতে। রোমের রাস্তার পাশের যেকোনো পিজ্জার দোকানেই এর দেখা পাওয়া যাবে।
তাজিন
‘তাজিন’ নামক এই পথখাবারটি পাওয়া যাবে মরক্কোর শহর মারাকাসে। এটি প্রকৃতপক্ষে উত্তর-আফ্রিকা হতে আসা আদিবাসীদের স্টু। জ্বলন্ত কয়লার ওপর কয়েক ঘণ্টা ধরে রান্না করা হয় এই তাজিন। এর মূল উপকরণই হলো- ভেড়া, গরু কিংবা মুরগির মাংস। সেই সঙ্গে সবজি ও প্রচুর পরিমাণে মসলা। তাছাড়াও ফল ও বাদাম দেওয়া হয় এটিতে। সাধারণত রুটির সঙ্গে খেতে দেওয়া হয় এই তাজিন। গোটা মরক্কোতেই এই পথখাবারটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার।
টাকোস আলপাস্তর
‘টাকোস আলপাস্তর’ হলো মেক্সিকো সিটির স্ট্রিটফুডের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত একটি খাবার। এর রান্নায় শুকনো মরিচ, মসলা ও আনারস ব্যবহার করা হয়। অত:পর পেঁয়াজ, ধনেপাতা ও আনারসের ছোট টুকরো দিয়ে পরিবেশন করা হয় এই খাবারটি।