দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হৃদরোগ কিংবা স্ট্রোকের অন্যতম কারণই হলো উচ্চ রক্তচাপ। করোনা সংক্রমণের পর যাদের পরিস্থিতি হঠাৎ করে গুরুতর হয়ে উঠছে, তাদের মধ্যে একাংশের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বিদ্যমান। তাই করোনা রোগীরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন উচ্চ রক্তচাপ।
যাদের এই সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে, তাদের আরও বেশি করে সাবধান হতে হবে। এই সময় প্রতিদিন রক্তচাপ মেপে দেখতে হবে। রক্তচাপ বেশি থাকলে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে। যে সকল নিয়ম পালন করলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে সেই বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করা হলো কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার একটি প্রতিবেদন থেকে।
পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
প্রোটিনে ভরপুর ডায়ে়ট আপনার জন্য খুবই উপযুক্ত। ফল, সব্জি, লো-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমিয়ে দিতে হবে। একটা খাবারের রুটিং রাখতে পারেন। প্রতিদিন কী খাচ্ছেন, কতোটা খাচ্ছেন তা লিখে রাখুন। কোনও খাবার কেনার সময় ভালো করে পিছনের চিরকুটটা পড়ুন। খাবারে কতোটা ফ্যাট, কতোটা প্রোটিন, কতোটা কার্বোহাইড্রেট রয়েছে সেগুলো ভালো করে দেখে নিন।
নিয়মিত শরীরচর্চা
প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা যে কোনও রকমের শরীরচর্চা করলে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে হঠাৎ করে হাইপারটেনশন দেখা যাবে না। সাধারণত হাঁটা, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার কাটা খুব ভালো ব্যায়াম। তবে এই লকডাউনে যেহেতু সেগুলি করা সম্ভব হচ্ছে না, তাই বাড়িতে সহজ কিছু কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ করে নিতে পারেন। হাই-ইনটেনসিটি ট্রেনিংও করতে পারেন বাড়িতে বসেই। ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও পাবেন এগুলো করার জন্য।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন
আপনার বিএমআই’এর মাত্রা জেনে নেওয়া একান্ত দরকার। আপনার বয়স, উচ্চতা ও আরও কিছু শারীরিক লক্ষণ অনুযায়ী আপনার কতো ওজন থাকা বাঞ্ছনীয় তা চিকিৎসকই বলে দেবেন। চেষ্টা করুন সেই ওজনটা ধরে রাখার জন্য। খুব বেশি বেড়ে যাচ্ছে মনে হলে ওজন কমানোর প্রয়াশও করতে পারেন। তবে তা নিয়ম মেনেই করতে হবে।
লবন খাওয়া কমান
প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবন কোনো প্রকারেই শরীরে যেতে দেবেন না। শুধু রান্নায় কতোটুকু লবন দিচ্ছেন সেটি দেখলেই চলবে না, বাজার থেকে যদি কোনও তৈরি করা খাবার কিনে আনেন, তাতে কতোটা লবন রয়েছে সেটিও দেখা দরকার। তাই কোনও কিছু কেনার আগে প্যাকেটের পিছনে লেখা চিরকুট মনোযোগ সহকারে পড়ুন। প্রসেস্ড ফুড না খাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। যে কোনও বাজার থেকে কেনা চটজলদি খাবারেও প্রচুর পরিমাণে লবন থাকতে পারে। সেগুলিও খেয়াল রাখতে হবে।
টেনশন মুক্ত থাকুন
নিজের মন শান্ত রাখা খুবই প্রয়োজনীয় একটি কাজ। নিয়ম করে নিঃশ্বাসের ব্যায়াম ও মেডিটেশন করতে পারেন। যে খবর পড়লে উদ্বেগ বেড়ে যাবে, সেগুলো এড়িয়ে চলায় ভালো। নিজের আশা-প্রত্যাশাগুলি অবশ্যইবাস্তবিক করুন। ছোট ছোট জিনিস নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে। যে কোনও কাজ যেটা করলে মন খুব ভালো থাকে, সেইসব কাজ করুন। গাছের পরিচর্যা, রান্না করা, ছবি আঁকা, গান শোনা যে কোনও রকমের শখ পূরণ করুন, এতে আপনার মন ভালো থাকবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।