দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আবারও আসছে ভয়াবহ সৌরঝড়। ইংরেজিতে যাকে বলা হয়ে থাকে সোলার স্টর্ম। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, এর কারণে গোটা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবস্থা হয়তো ভেঙে পড়তে পারে।
আবার সেটি কয়েক মাস স্থায়ীও হতে পারে। এই ধরনের সৌরঝড়কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়ে থাকে, করোনাল মাস ইজেকশান কিংবা সিএমই। যেটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসঙ্কেতটি দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। সম্প্রতি অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে ওই গবেষণাপত্রটি।
গবেষকরা জানিয়েছেন যে, এবার যে সৌরঝড় আসছে তেমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের ঝাপটা আধুনিক পৃথিবীকে এর আগে সইতে হয়েছিল ১৮৫৯ সাল এবং ১৯২১ সালে। সেক্ষেত্রে বলা হয় যে, ১০০ বছর পর আবারও ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের মুখোমুখি হতে চলেছে পৃথিবী। ১৯২১ সালে ভয়ঙ্কর সৌরঝড় আছড়ে পড়ায় পৃথিবীর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা ছিলো অভূতপূর্ব। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’।
তখনকার সেই সৌরঝড়ের আঘাতে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল। তার ফাঁক গলে ঢুকেছিল অত্যন্ত বিষাক্ত সৌরকণা ও মহাজাগতিক রশ্মি। টেলিগ্রাফের তার সশব্দে ফেটে গিয়ে দাউদাউ করে জ্বলেছিল দীর্ঘ সময় ধরেই।
গবেষকরা লিখেছেন যে, ‘এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় বা সিএমইর পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রতি দশকে থাকে ১.৬ শতাংশ হতে ১২ শতাংশ। এবার হয়তো তেমনই একটি সিএমইর আঘাত সইতে হতে পারে পৃথিবীকে। যার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
১৮৫৯ সাল এবং ১৯২১ সালের মতো তীব্রতায় হয়তো অততোটা না হলেও ১৯৮৯ সালের মার্চে যে সিএমই ধেয়ে এসেছিল পৃথিবীর দিকে তার আঘাতে কানাডার গোটা কুইবেক প্রদেশে টানা ৯ ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে পড়েছিল।
ওই গবেষণার মূল গবেষক ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঙ্গীতা আবদু জ্যোতি বলেছেন যে, ‘যেটা সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় আর তা হলো, আমরা করোনা মহামারির জন্য যেমন আদৌ কোনো রকম প্রস্তুত ছিলাম না এক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ হলো বায়ুমণ্ডলে কখন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় উঠবে তার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভবই নয় এখন পর্যন্ত। তবে এটুকু বলা যায় যে, সেই ভয়ঙ্কর সৌরঝড় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে অন্তত ১৩ ঘণ্টা সময় লাগবে।’
গবেষকদের আশঙ্কা হলো, এবার যে ভয়ঙ্কর সিএমই আসছে প়ৃথিবীর দিকে তার আঘাতে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে এক মহাদেশ হতে অন্য মহাদেশে যাওয়া ইন্টারনেটের যাবতীয় ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।