এম. এইচ. সোহেল ॥ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে। বিরোধী শিবির থেকে বলা হচ্ছে, ‘এতো নাচানাচি কেনো?’ অথচ এটি আমাদের দেশের ১৮ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক।
এর সঠিক জবাব দিতে গেলে প্রথমেই প্রশ্ন আসে যারা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে বাড়া বাড়ি হিসেবে দেখছেন তাদের জাতীয়তা বোধ নিয়েই প্রশ্ন তোলা যায়। এই পদ্মা সেতু জনগণের টাকায় নির্মিত হয়েছে। কোন দল বা গোষ্ঠি এটি করেছে সেটি মূখ্য বিষয় নয়। এটি জনগণের সম্পত্তি। এটি আমাদের দেশের ১৮ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক।
এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। নানা অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটতে দেখা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএসএফ -এর এক অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন, এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। গত এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ঘোষণা আসার পর ঘটেছে বেশ কিছু ঘটনা। যার মধ্যে অন্যতম ঘটনা হলো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনায় ১০ ফায়ারকর্মীসহ ৪৯ জনের প্রাণ গেছে। আরও বহু মানুষ এখনও হাসপাতালে লড়ছেন।
আবার সিলেটগামী পারাবত ট্রেনে আগুনের ঘটনাসহ আরও একটি ট্রেনে আগুনের ঘটনাও রয়েছে। একের পর এক একই সময় কেনো এমন ধরনের ঘটনা ঘটছে সেটি সত্যিই ভাববার বিষয়। ওইসব ঘটনা নাশকতার আভাষই পাওয়া যাচ্ছে।
আসলে আমাদের দেশের নাগরিকদের মধ্যে দেশাত্ববোধের খুবই অভাব। যে দলই ক্ষমতার বাইরে থাকে তারাই সরকারি দলের বিরোধীতা করতে গিয়ে জাতীয় বিষয়গুলোতেও একমত হতে পারেন না। এটি তো আমাদের সম্পদ। আর সেই সম্পদ বা স্থাপনাটি আমরা শত বছর ধরে ব্যবহার করবো। আমরা এবং আমাদের উত্তরসূরিরা এটি ব্যবহার করবেন যুগের পর যুগ। তাই এই সেতু নিয়ে আমাদের সকলেরই গর্ব করা উচিত। আমরা ব্যবহার করবো এবং আমাদের উত্তরসূরীরাও একদিন এটি সুফল ভোগ করতে পারবেন তাই আমাদের গর্ববোধ করা উচিত। অথচ তা না করে আমরা এর বিরুদ্ধেই কথা বলি। যা কারই কাম্য হতে পারে না।
পদ্মা সেতু আমাদের দেশের শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থায় নয়, পুরো অর্থনীতিকেই পাল্টে দেবে সেটি নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আগামী শনিবার ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু। তাই এই সেতুর উদ্বোধন নিয়ে বিরুদ্ধাচারণ না করে আসুন সবাই আমরা সেলিব্রেট করি আমাদের এই স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে। দলীয় মতামত যায়ই থাকুক না কেনো জাতীয় বিষয়গুলো আমরা যদি ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারি তাহলে আমাদের জাতিও একদিন বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন:
# পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম কী?
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
# পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কতো?
৬.১৫ কিলোমিটার।
# পদ্মা সেতুর প্রস্থ কতো?
৭২ ফুটের চার লেনের সড়ক।
# পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপিত কোথায়?
নিচ তলায়।
# পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কতো কিলোমিটার?
৩.১৮ কিলোমিটর।
# পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কতো কিলোমিটার?
দুই প্রান্তে ১৪ কিলোমিটার।
# পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন হয়েছে কতো কিলোমিটার?
দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটর।
# পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট ব্যয় কতো?
মূল সেতুতে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
# পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন ব্যয় কতো?
৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
# পদ্মা সেতু প্রকল্পে জনবল কতোজন?
প্রায় ৪ হাজার।
# পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার কয়টি?
৮১টি।
# পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা কতো?
৬০ ফুট।
# পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা কতো?
৩৮৩ ফুট।
# প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং কয়টি?
৬টি।
# পদ্মা সেতুর মোট পাইলিং সংখ্যা কতো?
২৬৪টি।
# পদ্মা সেতুতে কী কী রয়েছে?
গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং অপটিক্যাল ফাইবার লাইন পরিবহন সুবিধা।
# পদ্মা সেতুর ধরন কেমন?
দ্বিতলবিশিষ্ট এই সেতু কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত।
# পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা কতো?
৪২টি।
# পদ্মা সেতু প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানীর নাম কী?
চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।