দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নানা ধরনের শাকসব্জিতে লুকিয়ে আছে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মন্ত্র। সুস্থ থাকতে তাই বর্ষার এই সময়টিতেও শাকপাতা খেতে পারেন। কিছু নিয়ম মেনে চললে সমস্যা হবে না।
বর্ষা এলে অনেকেই শাকপাতা খাওয়া বন্ধ করে দেন। এটি কিন্তু মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। কারণ হলো শাকবসব্জি শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। তবে বর্ষায় অনেক সময় শাক খেতে বারণ করা হয়। কারণ হলো বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় শাক-পাতায় ব্যাক্টেরিয়া-জীবাণু জন্ম নেয়। রোগবালাইয়ের আশঙ্কা দূর করতে এই মৌসুমে শাকপাতা এড়িয়ে চলার কথা বলা হয়ে থাকে। অথচ বর্ষাকালেই নানা ধরনের সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। যে কারণে এই সময় প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি থাকাটা জরুরি। প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর মন্ত্র লুকিয়ে রয়েছে এই নানা ধরনের শাকসব্জিতে। সুস্থ থাকতে তাই শাকপাতা খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে কোনও সমস্যা হবে না।
# শাক কেনার সময় দেখে নিন শাক টাটকা কি না। দেখে সতেজ ও টাটকা মনে হলে তবেই সেই শাক কিনুন। নষ্ট হয়ে গেলে বা শাক হলদে হয়ে গেলে সেগুলো ভুলেও কিনবেন না। দরকার হলে কেনার সময় শাকের পাতা ছিঁড়ে পরখ করে দেখে নিতে পারেন।
# বাজার থেকে শাকপাতা কিনে আনার পর প্রথম কাজই হবে সেগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া। কারণ হলো শাকসব্জির ফলন যাতে ভালো হয় সে জন্যই অনেক সময় নানা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঠিক করে না ধুয়ে রান্না করলে পেটখারাপ ছাড়াও আরও অনেক রকম সমস্যা হতে পারে।
# আরও ভালো হয় রান্নার আগে যদি শাকসব্জি গরম পানিতে ভাপিয়ে নিতে পারেন। শুধু ভালো করে ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট নয়, শাকপাতায় থাকা ব্যাক্টেরিয়া, জীবাণু দূর করতে এর চেয়ে ভালো পন্থা নেই।
# সঙ্গে সঙ্গে রান্না না করলে শাকপাতা ধোয়ার পর পানি ঝরিয়ে শুকিয়ে নেওয়াটা জরুরি। ভিজে অবস্থায় রেখে দিলে নতুন করে ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে ওই শাকে। তা না চাইলে শাকসব্জি শুকনো করে রাখতে হবে।
# শাকপাতা জীবাণুমুক্ত করার আরও একটি উপায় হলো বরফপানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। মিনিট পাঁচেক বরফপানিতে রাখলে শাকপাতা সতেজ হবে। শাকপাতার সবুজ রং ও সতেজ ভাবও তখন অক্ষত থাকবে- গুণাগুণও ঠিক থাকবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org