দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ খাবারের মধ্যে থাকা কোলেস্টেরল, যে কোনওভাবেই হোক রক্ত কিংবা প্লাজ়মার কোলেস্টেরলের উপর প্রভাব ফেলে না, তেমনটিই মত পুষ্টিবিদদের।
উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে ডিমের কুসুম কিংবা হলুদ অংশটি বাদ দিয়ে সাদা অংশ খান অনেকেই। তবে খাবারের তালিকায় ‘আনসাং হিরো’র দলে থাকা এই ডিমের কুসুমের পুষ্টিগুণ কিন্তু অনেক। তেমন মত দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। ডিমের কুসুম খাওয়া খারাপ, এমন ধারণার কোনও যুক্তিই কিন্তু নেই। কবে থেকে এমন ধারণা শুরু হলো, সে দিকে একটু নজর দিতে হবে।
১৯৬৮ সালে ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফ থেকে বলা হয়েছিলো যে, হার্টের সমস্যা থাকলেও সপ্তাহে সর্বাধিক ৩টি কুসুমসহ ডিম খাওয়া যেতেই পারে। কারণ হলো তারা মনে করতেন, ডিমের কুসুম সরাসরি একেবারে রক্তে কোলেস্টেরলের উপর প্রভাব ফেলে। পরবর্তী সময় চিকিৎসা সংক্রান্ত যতো প্রকার গবেষণা সম্ভব, তার প্রায় সব ক’টিতেই দেখা গেছে, খাবারের মধ্যে থাকা কোলেস্টেরল, কোনওভাবেই রক্ত কিংবা প্লাজ়মার কোলেস্টেরলের উপর কোনই প্রভাব ফেলে না। তাই ডিমের কুসুমে থাকা অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ে অযথা মাথা ব্যথা হওয়ার কোনও রকম কারণ নেই।
ডিমের কুসুমে থাকা কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তা না করে বরং পুষ্টিগুণের দিকেই বেশি নজর দেওয়া যেতে পারে। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, মাছ বা মাংসের চেয়েও সামগ্রিকভাবে পুষ্টিগুণ বেশি তবে ডিমে। প্রোটিন, ভিটামিন ও বিভিন্ন খনিজের উৎসই হলো এই কুসুম। কুসুমে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই, বি১, বি২, বি৫, বি৬, বি৯ এবং বি১২।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, খুঁজলেও একসঙ্গে এতো ভিটামিন অন্য কোনও খাবারে পাওয়া যাবেই না। তাছাড়াও ডিমে রয়েছে জ়িঙ্ক ও আয়রণের মতো খনিজ, যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে। তাই পূর্ণবয়স্ক, সুস্থ যে কোনও মানুষ প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতেই পারেন। তবে হার্ট, কিডনি কিংবা ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org