দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুধের সঙ্গে ফল, তেলমশলা দেওয়া খাবার বেমালুম খেয়ে হজম করে ফেলেন অনেকেই। তবে সকলের পরিপাক করার ক্ষমতা কিন্তু সমান নয়। তাই কিছু খাবার দুধের সঙ্গে না খাওয়াই উত্তম।
সকালের নাস্তা হতে হবে রাজকীয়। তাই টক দই না থাকলেও দুধ কিংবা দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, দুধ, ফল রাখা হয়। সাধারণতভাবে দুধ-চিঁড়ে, দুধ ও কর্নফ্লেক্স খাওয়ার পর, প্রোটিন জাতীয় খাবার বা ফলও খেয়ে থাকেন। শিশু, মহিলা কিংবা বয়স্ক সকলের পর্যাপ্ত পুষ্টির জন্য দুধ খাওয়াটা দরকার। রাতে দুধ খেলে গ্যাসের সমস্যা হয় বলে তা সকালেই খাওয়ার অভ্যাস করেন। তবে সকালে নাস্তায় দুধ খেয়েও দেখলেন সেই একই সমস্যা। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, দুধের সঙ্গে ফল, তেল-মশলা দেওয়া খাবার বেমালুম খেয়ে হজমও করে ফেলেন অনেকেই। তবে সকলের পরিপাক করার ক্ষমতা কিন্তু সমান নয়। তাই কিছু খাবার দুধের সঙ্গে না খাওয়াই উত্তম।
দই
দুগ্ধজাত খাবার হলেও দুধের সঙ্গে দই খাওয়া শরীরের পক্ষে কিন্তু ক্ষতিকর। গ্যাসের ধাত থাকলে তা আরও বেড়ে যেতে পারে এই দুটি খাবার একসঙ্গে খাওয়ার কারণে তাই এই বিষয়টি মেনে চলতে হবে।
লেবুজাতীয় ফল
কমলালেবু, আঙুর, আনারস- এই ধরনের সাইট্রাস জাতীয় ফল কখনওই দুধের সঙ্গে খাওয়া যাবে না। এই ফলগুলোতে ভরপুর পরিমাণে অ্যাসিড থাকে। যে কারণে থাকা অ্যাসিড দুধের প্রোটিনকে সহজে হজমও হতে দেয় না। যে কারণে গ্যাস ও পেটব্যথার মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। দুধের সঙ্গে তো নয়ই, এমনকি দুধ খাওয়ার আগে ও পরেও টকজাতীয় ফল না খাওয়াই উত্তম।
গুড়
দুধের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে অনেক খাবারই তৈরি করা হয়। যেগুলো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে থাকে। তবে পেটের গোলযোগ ঠেকাতে হলে দুধের সঙ্গে গুড় খাওয়া যাবে না একেবারেই। এর পরিবর্তে চিনি খাওয়া যেতে পারে।
মাছ
হজমের সমস্যা থাকলে মাছ ও দুগ্ধজাত খাবার একসঙ্গে না খাওয়ায় ভালো। মাছ ও দুধের মতো প্রোটিন জাতীয় খাবার একসঙ্গে পেটের মধ্যে বিষক্রিয়াও করতে পারে। পেটের গন্ডগোল, সেইসঙ্গে অ্যালার্জির সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে।
নোনতা জাতীয় খাবার
নিমকি, চিপ্স, কুকিজ়ের মতো নোনতা জাতীয় খাবার খাবার দুধের সঙ্গে খেলে হজমের সমস্যা আটকানো যাবে না। উল্টে পেটফাঁপা, ইরিটেবল বাওয়েল্সের মতো সমস্যাও হতে পারে। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যও নষ্ট হতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org