দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স ষাটের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই যদি প্রতিদিনের রুটিনে একটু একটু করে কিছু কাজ যোগ করতে পারেন, তাহলে জীবনের গতি অনেকটাই সাবলীল হয়ে উঠতে পারে। এতে করে মন ও শরীরের অনেক রোগ প্রতিরোধ করা যাবে।
চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর একগাদা রোগ চারদিক থেকে চেপে ধরবে, এমন ধারণা থাকে অনেকের। কর্মজীবনের দীর্ঘ ২০-৩০ বছর এক রুটিনে থাকার পরও হঠাৎ অবসর শরীর ও মনের উপর চাপ ফেলে এটিই স্বাভাবিক। সকলে সেই চাপ সামলে উঠতে পারেন না অনেকেই। দিনে দিনে শরীর খারাপ হতে থাকে। পরিস্থিতি জটিল হলে চিকিৎসক ও ওষুধ ছাড়া এক পা ফেলার উপায়ও থাকে না। তবে মনোবিদরা বলেছেন, বয়স ষাটের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগে থেকেই যদি প্রতিদিনের রুটিনে একটু একটু করে কিছু কাজ যোগ করতে পারেন, তাহলে আপনার জীবনের গতি অনেকটাই সাবলীল হয়ে উঠতে পারে। বয়স বাড়লেও শরীর ও মনের উপর তার কোনও প্রভাবই পড়বে না।
শরীরচর্চা
প্রতিদিন অন্ততপক্ষে আধা ঘণ্টা শরীরচর্চা করলে অনেক রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাস ছয়েক টানা শরীরচর্চা করলে ক্যান্সারের মতো মারণরোগও ঠেকিয়ে রাখা যায়।
বাদাম খাওয়া
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন এক মুঠো করে বাদাম খেলে অকালমৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটা কমিয়ে আনা যায়। এইসব বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ই, কে, ম্যাগনেশিয়াম এবং কপারের মতো বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদান। এগুলো বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাওয়া রোগগুলোকে বশে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
ঘুমানোর আগে বই পড়া
ফোনের স্ক্রিন চোখ থেকে চোখ সরিয়ে প্রতিদিন অন্তত একটি পাতা করে বই পড়ার চেষ্টা করতে হবে। বয়স বাড়লে মানুষের ধৈর্যও তখন কমে আসে, আর তখন মনোযোগের অভাবও হয়। স্মৃতিশক্তি ফিকে হতে শুরু করে দেয়। ২০১৬ সালের একটি গবেষণা বলছে যে, বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা এই সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই বই পড়ার অভ্যাস।
গাছে পানি দেওয়া
অনেকেই বলেন যে, দীর্ঘ কর্মজীবন থেকে অবসরের পর বাগানচর্চা করে সময় পার করবেন। এই বিষয়ে মনোবিদরা বলেছেন, মন ভালো রাখতে বর্তমানে সবুজের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য নিদান দেওয়া হয় এবং িটি ভীষণভাবে কার্যকরীও। অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক বলেছেন, অবসরের পর দিনে অন্ততপক্ষে এক ঘণ্টা গাছের সঙ্গে কাটালে বয়সজনিত অনেক রোগই ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব।
বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলা
সারাদিনে অন্তত মিনিট দশেক যার সঙ্গে চট করে দেখা হয় না এমন কোনও বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার অভ্যাস করুন। গবেষণা বলছে যে, পরিবার-পরিজনের বাইরে সুস্থ আলোচনা আসলে বেঁচে থাকার রসদ জোগাতে সাহায্য করে থাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org