দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘স্কুলের ব্যাগটা বড্ডই ভারী, আমরা কি আর বইতে পারি’ এই গানটিই যেনো সত্যি হতে চলেছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে, ভারী স্কুল ব্যাগ বহন করার জন্যে পিঠে যন্ত্রণার সমস্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পড়ুয়াদের।
দিনভর অফিসের চেয়ারে বসে থেকেই কাজ করার কারণে পিঠে যন্ত্রণা হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি বিষয়। তবে সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে যে, শুধু প্রাপ্তবয়স্কদেরই নয় বরং পিঠে যন্ত্রণার সমস্যা পাল্লা দিয়েই বাড়ছে স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে। এর অন্যতম কারণই হলো স্কুলের ভারী ব্যাগ বওয়া। ‘স্কুলের ব্যাগটা বড্ডই ভারী, আমরা কি আর বইতে পারি’ এই গানটিই যেন সত্যি হতে চলেছে।
পড়াশোনার চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্কুলের ব্যাগও দিন দিন ভারী হয়ে যাচ্ছে। স্কুল যাওয়া-আসার পথে সে ব্যাগ কিন্তু ছোটদের কাঁধেই থাকে। দীর্ঘদিন ধরে ভারী ব্যাগ টানার কারণে স্কুলপড়ুয়ারা ভুগছে পিঠে ব্যথার সমস্যাতে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পিঠে ব্যথা হচ্ছে মানেই তারসঙ্গে মেরুদণ্ডের সমস্যা, এমন ভাবা মোটেও ঠিক হবে না। ছোটদের বিভিন্ন কারণে পিঠে ব্যথা হতেই পারে। ভারী ব্যাগ বহন করা সেই কারণগুলোর তালিকায় রয়েছে এক নম্বরে। এ ছাড়াও ক্লাসে দীর্ঘক্ষণ একভাবে শিরদাঁড়া সোজা করে বসে থাকা বা মাথা নিচু করে লেখা, ফোন ঘাঁটার কারণেও অনেক সময় পিঠে ব্যথা বাড়তে পারে।
‘স্ট্যানফোর্ড মেডিসিন চিলড্রেনস হেলথ’ অনুসারে জানা যায়, একটি শিশুর স্কুল ব্যাগের ওজন তার শরীরের ১৫ শতাংশের বেশি হওয়া মোটেও উচিত নয়। শিশুর বয়স অনুযায়ী পিঠের ব্যাগের ওজন হওয়াটাও জরুরি।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বাচ্চাদের ব্যাগের ওজন হওয়া উচিত দেড় কেজি থেকে ২ কেজি। তৃতীয় শ্রেণি হতে ৫ম শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন হওয়া উচিত ২ কেজি থেকে ৩ কেজি। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের স্কুল ব্যাগের ওজনের সীমাও ৩ থেকে ৪ কেজি। নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের ৫ কেজির বেশি ওজনের ব্যাগ বহন না করাই ভালো। দীর্ঘ গবেষণা করার পর গবেষকরা এই তালিকাটি তৈরি করেছেন।
চিকিৎসকরা ব্যাগ ব্যবহারের কিছু নিয়মাবলির কথাও জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, বাচ্চাদের স্কুল ব্যাগে দু’টো স্ট্র্যাপ থাকাটা জরুরি। যাতে ব্যাগের ভার দুটো কাঁধেই ঠিক সমানভাবে পড়ে। ব্যাগের উচ্চতা সব সময়ই কোমরের আগেই শেষ হয়ে যাওয়াটা ভালো। অনেক পড়ুয়াই দেখা যায় এক কাঁধে ব্যাগ নেন। এই অভ্যাস অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org