দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নাছোড়বান্দা কাশির চোটে অফিসে, বাড়িতে, বাসে, ট্রেনে সবখানের বিরক্তিকর অবস্থা। নানা রকম ওষুধের খোঁজ না করে শুকনো কাশি নিরাময়ে ঘরোয়া পানীয়ের উপর আপনি ভরসা রাখতে পারেন।
গুনগুন করে পছন্দের গান গাওয়া তো দূরে থাক, শুকনো কাশির জ্বালায় কথাও বলতে পারছেন না। হাসতে গেলেও কাশতে কাশতে প্রাণবায়ু বেরিয়ে আসার মতো অবস্থা হয়। কাশি কমানোর লজেন্স, সিরাপ থেকে তুলসীর নির্যাস- কোনও কিছুতেই যেনো কাজ হচ্ছে না। গলার কাছে সারাক্ষণ খুসখুস করে যাচ্ছে। গরম পানির ভাপ নিয়েও বুকে জমা কফ যেনো উঠছে না। এই শুকনো কাশি নিরাময়ে ঘরোয়া পানীয়ের উপর ভরসা রাখতেই পারেন।
কোন পানীয়ে কমবে এই শুকনো কাশি?
লেবু ও পুদিনা
প্রথমেই একটি পাত্রে পরিমাণ মতো পানি নিন। যারমধ্যে দিয়ে দিন কয়েক টুকরো লেবু, বেশ কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর এটি ছেঁকে নিয়ে এই পানীয়ের মধ্যে মিশিয়ে নিন কিছুটা মধু। সারাদিনে তিন বার খেতে পারলে শুকনো কাশির দৌরাত্ম্যও তখন কমবে।
হলুদ ও দুধ
সর্দি-কাশি নিরাময়ে, প্রদাহ নাশ করতে হলে দুধে সামান্য গুঁড়ো হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার রেওয়াজ নতুন কিছু নয়। তবে শুকনো কাশি নিরাময়ে এই পানীয়ের সঙ্গে যদি এক চিমটে গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে নেন, এতে দারুণ কাজ হবে। আপনি চাইলে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
অ্যাপ্ল সাইডার ভিনেগার
এক কাপ ঈষদুষ্ণ পানিতে ১ চা চামচ অ্যাপ্ল সাইডার ভিনেগার ও মধু মিশিয়ে নিতে হবে। শুকনো কাশি নিরাময়ে এই পানীয় দারুণভাবে কাজ করে। রাতে শোয়ার পূর্বে এই পানীয় খেলে কাশির জন্য ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটবে না।
আদা চা
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই আদা দেওয়া চা খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকের। তবে শুকনো কাশি নিরাময়ে শুধু এই পানীয় খেলেই হবে না। সেইসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে কিছু পরিমাণ মধু। শুকনো কাশির দাপট তাতে কমবেই। গলায়, শ্বাসযন্ত্রে কোনও সংক্রমণ থাকলে সেটিও নিরাময় হবে।
যষ্টিমধুর চা
শিশুদের খুসখুসে কাশি নিরাময়ে যষ্টিমধু খাওয়ানোর রেওয়াজ বহু পুরনো। তবে যষ্টিমধু দিয়ে তৈরি চা খেলে শুধু সর্দি-কাশিইড নয়, সংক্রমণজনিত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখবে। একটি পাত্রে গরম পানি ও যষ্টিমধু ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে তারমধ্যে মধু মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে এই যষ্টিমধুর চা। এটি খবুই উপকারী। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org