দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাঝে-মধ্যেই তীব্র মাথা যন্ত্রণায় কিছুই মনে থাকছে না। তখন প্রশ্ন আসে শরীরে কোন রোগ বাসা বাঁধলো? মোয়ামোয়া রোগ বাসা বাঁধলো না তো?
সন্তান জন্মের পরই তাকে বড় করতে গিয়ে তার সঙ্গে আর পাঁচটা শিশুর মিল তখন খুঁজে পাচ্ছেন না? যে বয়সে আর পাঁচটা শিশু অ, আ, ক, খ বলছে সাবলীলভাবে, তখনও আপনার সন্তান ঠিক মতো কথাই বলতে পারে না? এই ক্ষেত্রে শিশুদের নিয়ে একটু সতর্ক হতেই হবে। হতে পারে আপনার শিশু ‘মোয়ামোয়া’ নামে বিরল রোগেও আক্রান্ত হয়েছে।
জানা যায়, বংশগত এই রোগের প্রথম খোঁজ পাওয়া গিয়েছিলো জাপানে। ভারতে এখনও এই রোগটি বিরল। তবে ধীরে ধীরে ভারতীয়দের মধ্যেও এই রোগের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাড়ছে। তাই চিকিৎসা পদ্ধতি আগের চেয়েও উন্নত হচ্ছে। মোয়ামোয়া রোগ হলো সেরিব্রোভাসকুলার রোগ, যা মস্তিষ্কে থাকা বেসাল গ্যাংলিয়ায় অবরুদ্ধ ধমনীর কারণে হয়। জাপানি ভাষায়, মোয়ামোয়া মানে ‘ধোঁয়ার কুণ্ডলী’।
রোগীর কী ধরনের সমস্যা হয়?
এই ধরনের রোগিদের মাথায় ধোঁয়ার মতো রক্তকণা জমা হতে থাকে। তাদের রক্তনালি বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতাও তখন চলে যায়। যে কারণে একেকটি অঙ্গ একটু একটু করে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে থাকে।
এর উপসর্গ কী?
চিকিৎসকরা মনে করেন, শিশুরা এই ক্ষেত্রে দেরিতে কথা বলা শেখে। আর যারা স্কুলে যাচ্ছে, তাদের পড়ার সমস্যা হয়, এমনকি শেখার সমস্যাও হয়। বড়রা এই রোগে আক্রান্ত হলে মাথায় তীব্র যন্ত্রণাও বোধ করেন বা তাদের মধ্যে মৃগী রোগের লক্ষণও দেখা দিতে পারে। যেমন কিছু মনে রাখতে না পারা, কাওকে চিনতে না পারা, কোনও কিছু পড়তে অসুবিধা হওয়া এই রোগটির লক্ষণ হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের ইন্দ্রিয়গুলোর কাজে তার প্রভাবও পড়ে।
কীভাবে ধরা পড়ে এই রোগটি?
সেরিব্রাল আর্টেরিওগ্রাফি, ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স অ্যাঞ্জিওগ্রাফি ও ম্যাগনেটিক রেজ়োন্যান্স ইমেজিং- এই ৩টি পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকরা সাধারণ রোগী আদৌ মোয়ামোয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে কি-না সেটি যাচাই করেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org