দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকরা বলেছেন, খাবারে প্রোটিনের গঠন, হিস্টামিন নামক উপাদানের হেরফেরে ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে।
হয়তো হঠাৎ করেই সারা গায়ে লাল লাল র্যাশ বেরোচ্ছে। খাবার থেকেই যে এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তা আপনি বুঝতে পারছেন। তবে বেগুন বা চিংড়ি, সাধারণত যে ধরনের খাবার থেকে অ্যালার্জি হয়ে থাকে, তেমন কিছু তো আপনি খাননি! তাহলে গোলমাল শুরু হলো কোথা থেকে? চিকিৎসকরা বলেছেন, খাবারে প্রোটিনের গঠন, হিস্টামিন নামক উপাদানের হেরফেরের কারণে ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তবে শুধুমাত্র ডিম, চিংড়ি কিংবা বেগুন নয়, প্রতিদিনই পাতে থাকে, এমন কিছু চেনা খাবার থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। সুস্থ থাকতে বুঝে নিন, কোন কোন খাবারে আরও বেশি সমস্যা হতে পারে।
ঝিনুক ও গুগলি
এই ধরনের খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই ধরনের প্রোটিনকে মোটেও ভালো চোখে দেখে না। ফলস্বরূপ ত্বকে প্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়। তবে সকলের যে ঝিনুক, গেঁড়ি-গুগলি খেলে অ্যালার্জি হবে এমনটি কিন্তু নয়।
বাদাম
চিনেবাদাম খেলেও অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা হতেই পারে। কারণ হলো, বাদামের মধ্যেও কিন্তু ‘অ্যালার্জেনিক’ প্রোটিন থাকে। এই ধরনের প্রোটিন থেকেও ত্বকে এগজ়িমার মতো সমস্যা দেখা দিতেই পারে।
গরুর দুধ
সকালের নাস্তায় অনেকেই দুধ-কর্নফ্লেক্স খেয়ে থাকেন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার পূর্বে এক গ্লাস দুধ খাওয়ার অভ্যাসও রয়েছে অনেকের মধ্যে। এই বিষয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকে অ্যালর্জির সমস্যা হতে পারে। সারা শরীরের র্যাশ বেরোনো ছাড়াও বমি, হজমের মতো সমস্যাও হতে পারে। তাছাড়াও অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে তো বটেই, এমনকি যাদের অ্যালার্জি নেই, তাদেরও দুগ্ধজাত খাবার বেশি না খাওয়াই ভালো।
ডিম
প্রতিদিন পাতে অনেকের ডিম থাকে। ডিম অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। তবে ডিম অ্যালার্জির কারণও হতে পারে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে ডিম না খাওয়াই ভালো। ডায়রিয়া, ত্বকের র্যাশ, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে এই ক্ষেত্রে।
গমজাত খাবার
কেক, কুকিজ, পাউরুটির মতো কিছু ময়দার তৈরি খাবার থেকে অ্যালার্জি হতেই পারে। এই ধরনের খাবার প্রতিদিন পাতে থাকে অনেকের। তাই অ্যালার্জির ঝুঁকি এড়াতে এমন কিছু বেশি না খাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org