দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিভিন্ন রকম পানীয়ের মধ্যে দারচিনি মিশিয়ে খান অনেকেই। চায়ের মধ্যেও এই মশলা দিয়ে খাওয়ার চল রয়েছে। এই দারচিনির অনেক গুণ রয়েছে। দারচিনির গুণে মেয়েদের কোন কোন রোগ বশে থাকে? আজ জেনে নিন সেটি।
সাধারণ রান্নায় নানা রকম মশলার ব্যবহার করা হয়। তবে এটি শুধু স্বাদ বাড়িয়ে তোলার জন্যই নয়। প্রতিটি মশলার আলাদা আলাদা গুণও রয়েছে। আলাদা করে তো সব ধরনের মশলা খাওয়াও যায় না, তাই প্রতিদিনের খাবারে একটু একটু করে সেইসব মশলা যোগ করা হয়। হলুদ-জিরা-ধনে, এমনকি গরম মশলারও কিছু না কিছু গুণ রয়েছেই। অনেকেই বিভিন্ন রকম পানীয়ের মধ্যে দারচিনি মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। চায়ের মধ্যেও এই মশলাটি খাওয়ার চল রয়েছে। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, অন্যান্য মশলার চেয়েও গরম মশলার মধ্যে থাকা দারচিনি মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। তাহলে কী কী কাজে লাগে এই মশলাটি?
ঋতুচক্র স্বাভাবিক রাখে
মেয়েদের ঋতুচক্র স্বাভাবিক রাখতে হলে আগে হরমোনের সমতা বজায় রাখতে হবে। এই কাজে সাহায্য করে এই দারচিনি। ডিটক্স ওয়াটার, স্মুদির মধ্যে সামান্য দারচিনি মিশিয়ে খেলেই অনিয়মিত ঋতুস্রাব, পেটে যন্ত্রণা, অতিরিক্ত রক্তপাতের মতো সমস্যা নিরাময় হয়ে যেতে পারে।
পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, হরমোনের হেরফেরে অনেক মহিলা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস) এর সমস্যায় ভুগে থাকেন। যে কারণে স্বাভাবিক ঋতুচক্র ব্যাহত হয়। এই ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও দারচিনি দারুণ কাজ করে। ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকলে পিসিওএস-এর সমস্যাও তখন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করা
শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ, উৎপাদন ও কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে দারচিনি। খাবার খাওয়ার পরে রক্তে হঠাৎ শর্করার ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই মশলার জুড়ি নেই। ডায়াবেটিস বশে রাখতে পারলে অনেক রোগের আশঙ্কাই এড়িয়ে চলা যাবে।
ওজন ঝরাতে
হয়তো আপনি মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, অথচ ওজন ঝরাতেও চান। বিপাকহার উন্নত করা থেকে রক্তে শর্করার হেরফের- সবই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এক চিমটে দারচিনি। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, শরীরচর্চা ও ডায়েটের পাশাপাশি- দারচিনি দেওয়া পানি খেলেও এই ধরনের সমস্যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হার্টের জন্য
আবার রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে থাকলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। নিয়মিত দারচিনি খেলে এই ধরনের ঝুঁকি কমে যেতে পারে। কারণ হলো, এই মশলার মধ্যেই রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা সামগ্রিকভাবে হার্ট ভালো রাখে ও হার্টের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। তবে কোনো কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org