দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জার্মানি এ বছর দক্ষ চাকরি প্রার্থীদের প্রায় দুই লাখ ভিসা দেওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। এই সংখ্যাটি গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।

গত ১৭ নভেম্বর এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। অভিবাসন আইন সহজ করায় এই বৃদ্ধি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ডয়েচে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষ জনবলের সংকট কাটাতে জার্মানি কানাডার মতো পয়েন্টের ভিত্তিতে দক্ষ কর্মীদের জার্মানিতে আসার সুযোগ তৈরি করছে। সেজন্য অপরচুনিটি কার্ডও চালু করেছে জার্মানি। এই কার্ডের কারণে পেশাজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস করা শিক্ষার্থীদের জার্মানিতে পড়ালেখা এবং চাকরি খোঁজার সুযোগ বেড়েছে।
বর্তমানে জার্মানিতে প্রায় ১৩ লাখ ৪০ হাজার চাকরির পদ খালি রয়েছে। গত ৫ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ চাকরি সৃষ্টি হয়। যার মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরিই পেয়েছেন বিদেশিরা।
দেশটির সরকারী এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অভিবাসন আইন সহজ করার পর নন-ইইউ দেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা ইস্যুর হার ২০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে, শিক্ষানবিশ ভিসাও দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়াও বিদেশি পেশাদার সার্টিফিকেটের স্বীকৃতিও ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজা বলেছেন, মেধাবী তরুণরা জার্মানিতে তাদের প্রশিক্ষণ এবং পড়াশোনা আরও সহজে সম্পন্ন করতে পারছেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, অপরচুনিটি কার্ডের জন্য অভিজ্ঞ এবং সম্ভাব্য কর্মীরা বর্তমানে আরও দ্রুত এবং সহজে উপযুক্ত চাকরি খুঁজতে পারছেন।
অপরদিকে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, জার্মানির দক্ষ অভিবাসন আইন বর্তমানে ইউরোপের সবচেয়ে আধুনিক অভিবাসন আইন। অপরচুনিটি কার্ড যোগ্যতা, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একজন কর্মী অপরচুনিটি কার্ড পাবেন কিনা তা ঠিক করা হয়ে থাকে। এই লিংকে গিয়ে একজন ব্যক্তি এই কার্ড পাওয়ার যোগ্য কি-না, তা যাচাইও করতে পারেন। যারা এই কার্ডের আবেদন করবেন তাদের জার্মানিতে থাকাকালীন সময় প্রতিমাসে অন্তত এক হাজার ইউরো খরচ করার সামর্থ্য রয়েছে কিনা, তার প্রমাণও দিতে হবে।
প্রাথমিকভাবে এই কার্ডধারীরা সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য জার্মানিতে কাজ খোঁজার অনুমতি পান। এক বছর পর জার্মানিতে থাকা অবস্থায় কার্ডের মেয়াদ দুই বছর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য আবেদনও করা যায়। এই কার্ডে সপ্তাহে মোট ২০ ঘণ্টা এক কিংবা একাধিক খণ্ডকালীন চাকরিও করা যায়। চাকরি খোঁজার অংশ হিসেবে কার্ডধারীরা প্রতি কোম্পানিতে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের জন্য জব ট্রায়ালও করতে পারেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org