দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কার কখন মৃত্যু হবে সেটি একমাত্র রাব্বুল আলামিন জানেন। তবে কিছু লক্ষণ দেখা গেলে মানুষের মৃত্যু নিয়ে তখন অনেকটা বোঝা যায় বলে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময় বলেছেন। ঠিক তেমনই একটি খবর হলো, ঘুম থেকে ওঠার উপরই নাকি নির্ভর করছে কখন মৃত্যু হবে আপনার!
মৃত্যু হলো মানুষের অবধারিত একটি পরিণতি। কখন কার মৃত্যু হবে সেটি কেও জানেন না। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে অনেক কিছু আবিষ্কার করলেও মৃত্যুকে কেও ঠেকিয়ে রাখতে পারেননি। অর্থাৎ মহান আল্লাহতাআলা নিজের হাতেই রেখেছেন এই বিষয়টি।
আমাদের প্রত্যহিক জীবন প্রবাহে মানুষের শরীরের প্রতিটি কাজই একটা নির্দিষ্ট ছন্দ মেনে হয়ে আসছে। সেই ছন্দের শেষ ঝোঁকটিই পড়ে মৃত্যুতে। তাই সেটিও এই ছন্দেরই একটি অঙ্গ বলা যায়। প্রতিটি মানুষেরই ঘুমের একটা নিজস্ব অভ্যাস থাকে। আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের সুবিধামতো একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুমোতে যাই, আবার ঘুম থেকে উঠি নির্দিষ্ট একটি সময়েই। কিছুদিন এভাবে চলার পর দেখা যায়, রাত্রে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে আমাদের ঘুম আসে না, সকালে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর আমরা আর ঘুমোতেও পারি না।
এই বিষয়টিকেই বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন বডি ক্লক, অর্থাৎ এটিই হলো শরীরের অভ্যন্তরীণ ছন্দ। শরীর নিজের অজান্তেই এই অদৃশ্য ঘড়ি মেনে সমস্ত ক্রিয়াকর্ম সম্পাদন করে। ঘুম আসা এবং ঘুম হতে ওঠার কাজটাও এই ঘড়ি মেনেই চলে। খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, আমাদের খিদেও পায় দিনের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে। এটাও ঘটে থাকে ওই বডি ক্লক অনুসারেই।
কী হবে আপনার প্রতিক্রিয়া যদি আপনাকে বলা হয়, আপনার মৃত্যুর সময়টাও ওই বডি ক্লক অনুসারেই নির্ধারিত হতে চলেছে? নিশ্চয়ই এটি শোনার পর আপনি বিস্মিত হবেন। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দিতেও হয়তো পারবেন না, কারণ এই দাবি করেছেন খোদ হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একদল গবেষক।
ওই গবেষকদলের প্রধান অ্যান্ড্রু লিম জানিয়েছেন, ‘মানব শরীর সঞ্চালিত হয় মূলত শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ির দ্বারা। এই বডি ক্লকই শরীরের প্রতিটি অনৈচ্ছিক কাজ নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ যে কাজগুলি আমরা স্বেচ্ছায় কিংবা সচেতনভাবে করি না, সেগুলি এই বডি ক্লক মেনেই শরীরই করে থাকে! গবেষকরা বলেছেন, আমাদের গবেষণা বলছে, মানুষের মৃত্যুর সময়টাও যেহেতু তার নিজের হাতে নেই, সেহেতু সেই সময়টিও নির্ধারিত হয় বডি ক্লকের দ্বারাই!’
ওই গবেষণা দলের অপর এক বিজ্ঞানী শোধাকার্তোঁর বক্তব্য হলো, আমাদের শরীরের প্রতিটি কাজই একটা নির্দিষ্ট ছন্দ মেনেই হয়ে থাকে। সেই ছন্দের শেষ ঝোঁকটি হলো মৃত্যু। তাই সেটাও এই ছন্দেরই একটি অঙ্গ।
বিজ্ঞানীরা তাদের দাবির সপক্ষে পেশ করেছেন তাদের সমীক্ষালব্ধ তথ্য। তাদের বক্তব্য হলো, যেসব মানুষের উপর সমীক্ষা চালানো হয়েছিল, তাদের অধিকাংশেরই ১১টার খুব কাছাকাছি সময় মৃত্যু হয়েছিল। এঁরা মোটামুটি এই সময়টিতেই ঘুম হতে উঠতে অভ্যস্ত ছিলেন।
বিজ্ঞানীরা বলতে চাইছেন যে, যার যে সময় ঘুম হতে ওঠার অভ্যাস, মোটামুটি সেই সময়ই তার মৃত্যু হতে পারে। তবে হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুলের গবেষকরা অবশ্য এটাও জানিয়েছেন, এই বিষয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো সময় এখনও হয়নি। গবেষণার এখনও অনেক বাকি রয়েছে। সেটা সম্পূ্র্ণ হওয়ার পরে শেষ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা সম্ভব হবে।