দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার আঙ্গুরে কেমিক্যাল দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ আঙ্গুর আমদানি হয় ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। সেই আঙ্গুর আনার পর আমাদের দেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই কুকর্মটি করছে!
যে ফল আমরা অসুস্থ মানুষজনকে দেখতে গেলে প্রায় সবাই তার জন্য বেশি নিয়ে গিয়ে থাকি আর তা হলো আঙ্গুর। রোগীর স্বজন কিংবা বন্ধুরা মনে করেন, ফলটি সুস্বাদু এবং রোগীর জন্য ভালো হবে। কিন্তু তারা কি জানেন এই আঙ্গুরে ঠিক কি পরিমাণে রাসায়নিক মেশানো হয়? মূলত আঙ্গুর আমদানি হয়ে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক স্প্রে করেন।
ফল আমদানিকারক সমিতির (ফল ব্যবসায়ী সমিতি) সভাপতি হাজী মো. সেলিম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিদেশ থেকে আঙ্গুরসহ অন্য আমদানিকৃত ফলে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক থাকে। সেটা বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসম্মত। ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশ থেকে আঙ্গুর আমদানি করা হয়ে থাকে। এদেশে ফল আসার পর দীর্ঘদিন রেখে বিক্রি ও পচনরোধে ফরমালিন ও কেমিক্যাল সংমিশ্রণে দ্রবণ স্প্রে করে মেশানো হয়। একশ্রেণীর আড়ত মালিক ও আমদানিকারক এ কাজটি করে থাকেন।
জানা গেছে, দেশে দীর্ঘদিন ফল রেখে বিক্রির জন্য উপযোগী কোন সংরক্ষণাগার নেই। তাই ব্যবসায়ীরা ফল আমদানি করে নিজেরা তাতে বিভিন্ন রাসায়নিক ও ফরমালিন মিশিয়ে ওই দ্রবণটি স্প্রে করে গুদামে রেখে দেয়। সেই ফল মাসের পর মাস রাখলেও তাতে পচন ধরে না এবং ফল তরতাজা টাটকা থাকে।
ফল ব্যবসায়ীরার উদ্ধৃতি দিয়ে একটি দৈনিক বলেছে, দেশীয় উৎপাদিত ফলে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর সম্পর্কে অনেকের বিজ্ঞানসম্মত ধারণা নেই। সেই ক্ষেত্রে কৃষিবিদরা ফল চাষীদের কেমিক্যাল ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করতে পারেন বলে জানান হাজী সেলিম। মোবাইল কোট প্রায়ই অভিযান চালিয়ে অন্যান্য ফলের সঙ্গে আঙ্গুরে প্রচুর পরিমাণ ফরমালিন ও কেমিক্যাল থাকার প্রমাণ পেয়েছে। ইতিমধ্যে বিপুল পরিমাণ কেমিক্যালযুক্ত আঙ্গুর ধ্বংস ও জড়িত শতাধিক ব্যবসায়িকে জেল জরিমানা করলেও তাদের টনক নড়েনি।
শিশু, গাইনি, ক্যান্সার, কিডনি, লিভার ও স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, বিষাক্ত আঙ্গুর ফল খেলে ক্যান্সার, কিডনি, লিভারসহ মরণব্যাধি হওয়ার আশংকা বেশি। শেরেবাংলা নগরস্থ ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন ও মহাখালী ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, আঙ্গুরসহ যে কোন ফলে সামান্য কেমিক্যালই মানবদেহের ক্ষতির জন্য যথেষ্ট। ফরমালিনসহ যে কোন কেমিক্যাল স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
তাহলে আমরা নির্ভাবনায় রোগীর পথ্য হিসেবে যে ফলটি বেশি নিয়ে যায় সেই ফলটিই আসলে খাবার অযোগ্য! এ অবস্থা চলতে থাকলে রোগী সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়বে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ বিষয়ে দেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসহ সচেতন সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কঠোর আইন প্রয়োগ ও সেই সঙ্গে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করাও এখন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।