দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাশরুম বর্তমানে আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় খাবারে পরিণত হয়েছে। এর চমতকার স্বাদ ও গুণাগুণের কারণে। মাশরুম সম্পূর্ণ হালাল খাবার যা আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাবারে ব্যবহার করে থাকি। নানা ভেষজগুণে ভরপুর মাশরুম।
মাশরুম ক্লোরোফিল বিহীন একটি ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ যা আমরা আমাদের খাবারে সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। মাশরুমে প্রায় ৩০% প্রোটিন এর পাশাপাশি শর্করা, চর্বি আরো নানান খাদ্য উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য দরকারি। মাশরুমের স্বাদ ও খাদ্যগুণের সাথে সাথে এটির ঔষধিগুণ আছে অনেক যা আপনাকে অবাক করবে। এর ঔষধিগুণ দ্বারা আমরা আমাদের নানান রোগের চিকিৎসা ও প্রতিষেধক হিসেবেও গ্রহণ করতে পারি।
চলুন তাহলে যেনে নেই মাশরুমের কিছু ঔষধি গুণাগুণ:
হৃদরোগ
মাশরুম নিয়মিত খাবারে ব্যবহার করলে আমাদের শরীরে হৃদরোগের ঝুকি অনেক অংশে কমে যায়। মাশরুমে ইরিটাডেনিন, লোভাস্টটিন, এনটাডেনিন, কিটিন এবং ভিটামিন বি, সি ও ডি ইত্যাদি উপাদান রয়েছে যার ফলে আমাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
ডায়াবেটিস (বহুমূত্র)
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র আমাদের খুবি পরিচিত রোগ। এই রোগের ফলে আমাদের চলাচলে অথবা জীবনের নানান কাজে বাধার সৃষ্টি হয়। শর্করা ও ফ্যাট কম হওয়ার কারনে মাশরুম ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগীদের জন্য একটি আদর্শ খাবার। মাশরুম নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরের ব্লাড সুগার কমে আসে। মাশরুম একটি আঁশ জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারি খাবার।
পেটের সমস্যায়
মাশরুমে আমরা অনেক বেশি পরিমানে এনজাইম বিশেষত ট্রিপসিন পাওয়া যায় এবং অগ্ন্যাশয় থেকে নির্গত জারকরস পাওয়া যায় এটি আমাদেরকে এই খাদ্য পরিপাক ও হজমে সাহায্য করে। আমরা আগেই জেনেছি যে মাশরুমে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন বিদ্যমান যা খুব সহজেই হজম হয় এবং খুবি মুখরোচক। মাশরুম খেলে আমাদের মুখের রুচি বাড়ে। এর ফলে খাবারের প্রতি অনিহা কমে আসে। আমরা নিয়মিত মাশরুম খেলে আমাদের পেটের পীড়ায় এটি বিশেষ ভাবে ভুমিকা রাখে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ব্রিদ্ধি
আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ব্রিদ্ধির জন্য সকলের পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিন ও মিনারেল দেহে প্রদান করতে হয় নিয়মিত। এই ভিটামিন ও মিনারেল মাশরুমে প্রচুর পরিমানে বিদ্যমান যা গ্রহণের ফলে আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে। মাশরুমে পটাসিয়াম, আয়রনের পাশাপাশি সেলেনিয়াম পাওয়া যায়। সেলেনিয়াম এমন একটি খাদ্য উপাদান যা আমরা শুধু মাছেই পেয়ে থাকি সুতরাং আমরা যারা মাছ খেতে অনিহা করি তারা অনায়াসে মাশুরুমের মাধ্যমে মাছের চাহিদা পূরণ করতে পারবো। মাশরুমে আমরা আরো পাই এরগোথিওনেইন যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সাথে সাথে এটি আমাদের দেহের জন্য ঢালের মতো কাজ করে। মাশরুম সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল শূন্য যার ফলে আমাদের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এর পাশাপাশি রক্তের প্রবাহ, চাপ ইত্যাদি স্বাভাবিক থাকে।
ওজন কমান
মাশরুম আঁশ জাতীয় খাবার যা আমাদের শরীরের পাকস্থলীকে অধিক সময়ে ধরে পূর্ণ রাখে যার ফলে আমাদের উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। মাশরুম আমাদের শরীরের ব্লাড সুগার কমিয়ে আমাদের ওজন কমাতে এক বিশেষ ভুমিকা পালন করে। আমরা যে সকল খাবার খাই যা আমাদের দেহে ওজন বৃদ্ধি করে যেমন লাল মাংস, চকলেট ইত্যাদি খাবারকে বর্জন করে যদি মাশরুম গ্রহণ করি তাহলে আমাদের ওজন খুব কম সময়ে কমে আসবে।
এছাড়াও আমরা মাশরুমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি পেয়ে থাকি যা আমাদের স্নায়ুর জন্য খুব উপকারি এবং নানান বয়সজনিত রোগ থেকে আমরা আরোগ্য লাভ করতে পারি। মাশরুমের পটাশিয়াম, ক্যলসিয়াম, ফসফরাস আমাদের দাঁত ও হাড়কে মজবুত করে তোলে। মাশরুম আমাদের কিডনি রোগেরও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। মাশরুমে নিউক্লিক এসিড ও অ্যান্টি এলার্জেন থাকে। মাশরুমে সোডিয়ামের পরিমান কম থাকে যার ফলে আমাদের অ্যালার্জি থেকে মুক্ত রাখে।