দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একজন মানুষ বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করতে পারেন। তারমধ্যে ব্যক্তিত্ব্যে সমস্যা, গুরুতর মানসিক রোগ বা স্বল্পতর মানসিক, মাদকাসক্তি, এনজাইটি, ডিপ্রেশন কিংবা প্ররোচনা ইত্যাদি হতে পারে। কী কারণে মানুষ আত্মহত্যা করে? সেই বিষয়টি নিয়েই এই প্রতিবেদন।
এক গবেষণা দেখা গেছে যে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৩৯ দশমিক ৬ জন আত্মহত্যা করে থাকে। অন্যান্য দেশে ছেলেদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি হলেও বাংলাদেশে এই হার নারীদের মধ্যেই বেশি। সাধারণত কম বয়সী মেয়েদের মধ্যে এই আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
স্বল্পশিক্ষা, দারিদ্র্য, দাম্পত্য কলহের জন্য অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তাছাড়াও প্রেম-সম্পর্কিত জটিলতা, আর্থিক অনটন, দীর্ঘস্থায়ী রোগ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব ইত্যাদি আত্মহত্যার পেছনের অন্যতম কারণ।
সাধারণত যেসব কারণে মানুষ আত্মহত্যা করে
বিষণ্ণতা বা একা থাকা। সর্বক্ষণ মনমরা হয়ে থাকা, উৎসাহ-উদ্যম হারিয়ে ফেলা কিংবা ঘুম কমে যাওয়া কিংবা বেড়ে যাওয়া, রুচি কমে যাওয়া কিংবা বেড়ে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া কিংবা বেড়ে যাওয়া, কাজকর্মে কোনো শক্তি না পাওয়া, মনোযোগ হারিয়ে ফেলা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, নিজেকে নিঃস্ব অপাঙক্তেয় ব্যক্তি হিসেবে মনে করা, অযাচিত অপরাধবোধ এবং আত্মহত্যার কথা বলা কিংবা ভাবা। এইসব লক্ষণগুলো টানা দুই সপ্তাহের বেশি থাকলে আমরা তাকে মেজর ডিপ্রেশনের রোগী বলে থাকি এবং তিনি আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে ধরে নেওয়া যায়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, যে কোনো সমস্যায় আত্মহত্যা নিয়ন্ত্রণের উপায় হলো কাছের কাওকে তার সমস্যার কথাটি খুলে বলা। খোলোমেলা আলোচনা করতে হবে। কখনই কোনো সমস্যা নিজের মধ্যে পুষে রাখা যাবে না। সমস্যা পুষে রাখলে বিষণ্ণতায় পরিণত হয়ে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হবে। এক সময় আপনি আত্মহননের দিকেই এগিয়ে যাবেন।
আত্মহত্যার প্রবণতার চিকিৎসা
সাইকিয়াট্রিস্টের তত্ত্বাবধানে থেকে নানা প্রকারের কার্যকরী এন্টিডিপ্রেশেন্ট ড্রাগ সাইকোথেরাপি এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে একজন ডিপ্রেশনের রোগীকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তোলা যায়। সাধারণতভাবে এমিট্রিপটাইলিন, এস সিটালোপ্রাম, সিটালোপ্রাম, মিরটাজাপিন এন্টিডিপ্রেশন হিসেবে এর খুবই কার্যকরী।
সারাবিশ্বে ক্রমবর্ধমান ডিপ্রেশনের এই ভয়াবহতা উপলব্ধি করে বহু আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের স্লোগান করা হয়েছিলো- “ডিপ্রেশন: লেট’স টক” অর্থাৎ “আসুন, ডিপ্রেশন নিয়ে আলোচনা করি”। সবশেষে আবারও বলছি যে, ডিপ্রেশনের রোগীরা সবার অগোচরেই আত্মহত্যা করে বসেন। তাই তাদের সঙ্গে সব সময় প্রাণ খুলে কথা বলুন, সময় দিন এবং যতো দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
# ডা. সাঈদ এনাম এর প্রকাশিত লেখা অবলম্বনে।