দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাই ব্লাডপ্রেসার একটি জটিল অসুখ। তাই এই রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে সামান্য কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা।
আমাদের শরীরে রক্তপ্রবাহের সময় রক্তনালীর ভিতরে যে চাপ তৈরি হয়ে থাকে, মূলত তাই হলো রক্তচাপ। এইক্ষেত্রে আমাদের স্বাভাবিক রক্তচাপ হলো ১২০/৮০ এমএমএইচজি। তবে কোনো কারণে ব্লাড প্রেশার ১৪০/৯০-এর উপরে পৌঁছে গেলে তাকে হাই ব্লাডপ্রেসার বলে ধরে নিতে হবে।
তবে মুশকিলের বিষয় হলো, হাই ব্লাডপ্রেসার একটি জটিল অসুখ। এই রোগকে ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে কিডনি, চোখ, হার্টসহ দেহের একাধিক অঙ্গের ক্ষতিও হতে পারে। তাই যেভাবেই হোক রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
শুধু ওষুধ খেয়ে এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না। বরং এই অসুখকে কন্ট্রোলে রাখার জন্য কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা আপনি ব্যবহার করতে পারেন। আশা করছি যে, এতে আপনার ব্লাডপ্রেসার দ্রুত গতিতে কমে যাবে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে আর দেরি না করে, যতো দ্রুত সম্ভব এইসব ‘হোম রেমেডিজ’ সম্পর্কে জেনে নিয়ে ব্যবহার শুরু করে দিন।
এক্সারসাইজ ইজ মাস্ট
এই অসুখটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে আপনাকে নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করতে পারলে এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে প্রতিদিনের রুটিনে এবার এক্সারসাইজকে জায়গা করে দেওয়াটা হবে আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।
কিন্তু কারও কারও শরীরচর্চায় অনীহা থাকে। তারা বরং প্রতিদিন হাঁটতে পারেন। এতেও উপকার পাবেন হাতেনাতে।
কাঁচা লবণ বর্জন
লবণে রয়েছে সোডিয়াম যা কিনা শরীর পানি ধরে রাখে। এই কারণেই বেড়ে যায় প্রেসার। তাই হাই প্রেসার রোগীদের যখন তখন লবণ খাওয়া কমাতে হবে। বিশেষ করে, ভাতের পাতে লবণ খাওয়া তো একেবারেই চলবে না। এতেই দেখবেন উপকার পাচ্ছেন। আপনার ব্লাডপ্রেসার তখন হবে নিম্নমুখী।
তবে অনেকেই ভাবেন যে, বিট লবণ বা সৈন্ধব লবণ খেলে বুঝি প্রেসার বাড়ে না। যদিও এই ধারণার কোনও সারবত্তায় নেই। বরং এইসব লবণ খেলেও প্রেসার বাড়তে পারে। তাই এদের থেকেও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা ভালো।
পটাশিয়ামযুক্ত খাবার
ব্লাডপ্রেসার রোগীদের ডায়েটে পটাশিয়ামযুক্ত খাবার রাখার পরামর্শ দিয়েছে মেডিক্যাল নিউজ টুডে। প্রকৃতপক্ষে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেলে রক্তনালী রিল্যাক্স করার সুযোগ পায়। যে কারণে খুব কম সময়ের মধ্যে হাই প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। তাই ডায়েটে শাক, সবজি এবং ফল বেশি পরিমাণে রাখার চেষ্টাও করুন। এমনকী খেতে হবে দুধ এবং দই।
কফি পান
ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে যখন-তখন কফির কাপে চুমুক দেওয়ার ইচ্ছে কমাতে হবে। কারণ কফিতে মজুত থাকা ক্যাফিন প্রেসার বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই সুস্থ থাকার ইচ্ছে থাকলে দিনে ১ থেকে ২ কাপের বেশি কফি কখনও খাবেন না। এর পরিবর্তে ফলের রস কিংবা হেলথ ড্রিংকস খেতে পারে। এতে করে আপনার রক্তচাপ থাকবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org