দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকলে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। হঠাৎ করেই হৃদস্পন্দনের ছন্দ অনিয়মিত হয়ে ওঠে। আবার রক্তের চাপও কমে যেতে পারে।
করোনার সময় সমস্যা ছিলো শ্বাসকষ্ট হওয়ার। যে কারণে তখন অক্সিমিটার নিয়ে বসতে হতো। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কতোটা রয়েছে, তা দেখতে দিনে বার বার যন্ত্র দিয়ে মাপা হতো। সুস্থ মানুষের দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ হতে ১০০ পর্যন্ত হলেই তা স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়ে থাকে। তবে তা ৯০ বা ৮০-র নীচে নেমে গেলে জটিলতা তখন বাড়তে থাকে। প্রথমেই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকলে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। হঠাৎ হৃদস্পন্দনের ছন্দ অনিয়মিত হয়ে পড়ে। রক্তের চাপ কমে যেতে পারে। আর পরিস্থিতি গুরুতর হলে বাইরে থেকে অক্সিজেনের জোগান দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায়ও তখন থাকে না। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, প্রতিদিনের ডায়েটে এমন কিছু খাবার রাখা যেতে পারে, যা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলবে সাহায্য করবে।
বেদানা
এই বেদানায় নাইট্রেট্স ও পলিফেনল্সের মতো দু’টি যৌগ রয়েছে। যা নিয়মিত খেতে পারলে রক্তে অক্সিজেনের জোগান বেড়ে যেতে পারে। অনেকেই বলেন, বেদানার বীজের মধ্যে এমন এক উপাদান রয়েছে যা রক্তবাহিকার পথ আরও প্রশস্ত করতে সাহায্য করে।
কিউই
কিউই এমন একটি জিনিস যা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজে ভরপুর এটি রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদরা বলেছেন, এতে থাকে আয়রণের পরিমাণ বেশি। যা দ্রুত অক্সিজেনকে রক্তের মধ্যেদিয়ে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পৌঁছে দিতেও সাহায্য করে।
পালং শাক
পালং শাকে নাইট্রেট ও আয়রণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে। সারা দেহে রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার জন্যেই ওষুধ নয়, নিয়ম করে পালং শাক খেলে অনেকটা কাজ হয়ে যায়।
কমলালেবু
রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলার জন্য শুধুমাত্র আয়রণে সমৃদ্ধ খাবার খেলেই চলবে না। এর কারণ, ভিটামিন সি ছাড়া আয়রণ একা একা কোনও কাজও করতে পারে না। তাই ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ কমলালেবুও খাওয়াটা জরুরি।
আখরোট
আখরোট নিয়মিতভাবে খেলে রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তে অক্সিজেনের জোগান ভালো রাখার পাশাপাশি ধমনীর মধ্যে যদি প্রদাহ হয়ে থাকে, সেটিও নিরাময় করতে পারে এই বিশেষ বাদাম বা আখরোট। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org