দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা প্রায় সময় টানা ল্যাপটপে কাজ করি। এতে চোখে ব্যথা, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া বা চোখ থেকে পানি পড়ার মতো লক্ষণগুলো এই প্রজন্মের অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। চিকিৎসা পরিভাষায় এটি ‘ডিজিটাল আই স্ট্রেন’ নামে পরিচিত।
প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার অ্যালার্ম থেকে শুরু করে রাতে শুতে যাওয়ার আগে ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করানোর অ্যাপ- সবই রয়েছে আমাদের মুঠোফোনে। সারাদিন কাজের জন্য ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকা তো রয়েছেই। ইচ্ছে না করলেও গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে যন্ত্রনির্ভর হতে হয় আমাদেরকে। এই যন্ত্রের প্রতি অত্যধিক নির্ভরশীলতা চোখের ক্ষতির অন্যতম কারণ। চোখে ব্যথা, সাম্প্রতিক সময় দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া বা চোখ থেকে পানি পড়ার মতো লক্ষণগুলো এই প্রজন্মের অনেকের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসা পরিভাষায় এটি ‘ডিজিটাল আই স্ট্রেন’ নামে পরিচিত। চিকিৎসকরা বলেছেন, ডিজিটাল যন্ত্রের দিকে একটানা অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতেই পারে। পছন্দের সিরিজ়ের প্রতিটি পর্ব শেষ না করে টিভির সামনে থেকে উঠতে পারেন না অনেকেই। এই ভুলেই চোখের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। তাই যতো গুরুত্বপূর্ণ কাজই আপনি করুন না কেনো, কাজের মধ্যে বিরতি নেওয়াটা জরুরি।
ডিজিটাল আই স্ট্রেন হলে কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে?
দীর্ঘক্ষণ ফোন বা ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকলে ড্রাই আই-এর সমস্যাও হতে পারে। কাজ করতে করতে হঠাৎ করে চোখ ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। চোখে আর্দ্রতার স্তরও নষ্ট হতে পারে। তাছাড়াও, চোখের পেশিও ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। যে কারণে অনেকের চোখের পলক ফেলতেও অনেক সময় কষ্ট হয়।
চোখকে সুরক্ষিত রাখতে কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?
২০-২০-২০ নিয়ম মেনে চলতে হবে
ফোন বা ল্যাপটপে যে কাজই আপনি করুন না কেনো, প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ড ধরে ২০ ফুট দূরত্বে (একেই বলে ২০-২০-২০ নিয়ম) থাকা নির্দিষ্ট কোনও একটি বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকার অভ্যাসও করতে হবে।
বার বার চোখের পলক ফেলা
একটি জিনিস খেয়াল রাখবেন আর তা হলো, চোখের পলক না ফেলে একভাবে কোনও কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না। যতো মনোরম দৃশ্যই হোক না কেনো, মাঝে-মধ্যেই চোখের পলক ফেলার অভ্যাস অবশ্যই করতে হবে।
দূরত্ব বজায় রাখা
বিছানায় শুয়ে বা টেবিল বুকের কাছে টেনে এনে, গা হেলিয়ে কম্পিউটারে কাজ করতে বা ফোনে সিরিজ় দেখতে হয়তো ভালোই লাগে। তবে চোখের ক্ষতি করতে না চাইলে এই ধরনের যন্ত্রের সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org