দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ সময় একভাবে ঘাড় গুঁজে কাজ করলে যন্ত্রণা হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এই ধরনের ব্যথা যে শুধু ফোন দেখে কিংবা দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপে কাজ করলেই হতে পারে, এমনটি অবশ্য নয়। অন্য কারণেও এটি হতে পারে।
ঘরে বসে অনলাইনে পড়াশোনা, আবার অফিসের কাজ করেন অনেকেই। ফলস্বরূপ ঘাড়ের ব্যথায় কষ্ট পেতে হয় অনেককেই। বেশিক্ষণ হাতে ফোন দেখলে বড়রাও সাবধান করেন ছোটদের। দীর্ঘ সময় একভাবে ঘাড় গুঁজে কাজ করলে যন্ত্রণা হওয়াটা কিন্তু স্বাভাবিক। তবে এই ধরনের ব্যথা যে শুধু ফোন দেখে কিংবা দীর্ঘ সময় ল্যাপটপে কাজ করলেই হতে পারে এমনটি অবশ্য নয়। ভারি জিনিস তোলার সময় অসাবধানতায় ঘাড়ে চোট পেলেও অনেক সময় ব্যথা হতে পারে। প্রথম অবস্থায় অগ্রাহ্য করলে ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই ফেলে না রেখে ঘাড়ে ব্যথা কেনো হচ্ছে, আগে তার উৎস খুঁজে বের করা দরকার।
অত্যাধিক পরিশ্রম করা
রোগা হবেন বলে অত্যাধিক পরিশ্রম করছেন? তাহলেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। একই রকমভাবে একদিনে বাড়ির সমস্ত কাজ করলেও ঘাড়ের পেশির উপর পড়তে পারে চাপ। বিরতি না নিয়ে একটানা অনেকক্ষণ গাড়ি চালালেও ঘাড়ের পেশির উপর চাপ পড়ে।
ভুল ভঙ্গি
যোগাসন, জিমে গিয়ে ভুল শরীরচর্চা বা শোয়ার ভুলেও ঘাড়ে অনেক সময় চোট লাগতে পারে। যা থেকে ঘাড়ের ব্যথা দীর্ঘায়িও হয়। দীর্ঘদিন একইভাবে কাঁধে ভারি ব্যাগের বোঝা নিলেও ঘাড়ের পেশিতে চোট লাগতে পারে।
পুরনো ক্ষত
এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ঝাঁকুনিতে কিংবা দুর্ঘটনায় ঘাড়ে চোট লেগে থাকলে, সেই ব্যথাই ঘুরে ফিরে আবারও আসতে পারে। সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
আর্থ্রাইটিস
বাতের নাম শুনলে প্রথমেই হাঁটু, কোমরের কথাই মাথায় চলে আসে। তবে ঘাড়ের ভার্টিব্রাল অস্থিসন্ধিতেও আর্থ্রাইটিস হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ঘাড়ে কষ্ট হয়।
মানসিক চাপ
মানসিক চাপের সঙ্গেও মাথা ও ঘাড়ের সম্পর্ক রয়েছে। চিকিৎসকরা বলেন, উদ্বেগ, মানসিক চাপ, অবসাদের মতো ঘটনাও ঘাড়ের পেশির উপর চাপ ফেলতে পারে। রক্তচাপ বেড়ে গেলে কাঁধে, ঘাড়ে কষ্টও হতে পারে। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে ঘাড়ের যন্ত্রণাও তখন দীর্ঘায়িত হয়ে থাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org