দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উদীয়মান ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান রেজার ক্যাপিটালের বিনিয়োগ পেয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় অ্যাগ্রিটেক স্টার্টআপ (কৃষিপ্রযুক্তি উদ্যোগ) আইফার্মার।
রেজার ক্যাপিটালের ‘সিরিজ এ’ ফান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে এ বিনিয়োগ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি কৃষকের ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কৃষিপ্রযুক্তি খাতকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে। এরই ধারাবাহিকতায়, দেশের কৃষি ভ্যালু চেইনের অংশীদারদের মাঝে আইফার্মারকে সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্কে পরিণত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তারা।
আইফার্মারের সাম্প্রতিক এই বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি নিজেদের প্রতিশ্রুতি আরও জোরদার করলো রেজার ক্যাপিটাল। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং পার্টনার ঔসামা গ্লিলাহ পূর্ণ পর্ষদ সদস্য হিসেবে আইফার্মারের পরিচালনা পর্ষদে যোগ দিয়েছেন; যেখানে তিনি তার পারিবারিক ব্যবসা ফ্রেশ দেল মন্তে (এনওয়াইএসই: এফডিপি) থেকে প্রাপ্ত কৃষি-বিষয়ক বিস্তৃত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর সুযোগ পাবেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ২০১৬ সালে বিনিয়োগ শুরু করে রেজার ক্যাপিটাল। বর্তমানে দেশ একটি কঠিন সময় পার করলেও আন্তর্জাতিক ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলোর মধ্যে আমরাই অন্যতম যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি। প্রতিষ্ঠান ও দেশকে সফল ও সমৃদ্ধ করতে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাতা, অংশীদার ও সহ-বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে চাই।”
কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ, খামারের ক্ষেত্রে বিশেষায়িত পরামর্শ প্রদান, আর্থিক সেবায় অংশগ্রহণ এবং কৃষকের পণ্য বিক্রিতে বাজারের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের মতো কৃষিভিত্তিক সেবা সম্প্রসারণে ২০১৯ সালে ফাহাদ ইফাজ ও জামিল আকবর পূর্ণাঙ্গ কৃষি স্টার্টআপ হিসেবে আইফার্মার প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিনিয়োগ আইফার্মারকে আরও বেশি কৃষকের কাছে নিয়ে যেতে, রপ্তানি বাজার সহ প্রতিষ্ঠানের সাপ্লাই চেইন সক্ষমতা বাড়াতে এবং যথাযথ পরামর্শ সেবা প্রদানের পাশাপাশি, ব্যক্তিগত পর্যায়ে জলবায়ু-বান্ধব কৃষি সরঞ্জামে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের কৃষিখাত ৫০ বিলিয়ন (৫,০০০ কোটি) মার্কিন ডলার আয়তনের, যেখানে ১ কোটি ৬৫ লাখ কৃষক কাজ করে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কৃষকদের জন্য ৫ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের অর্থায়ন সহযোগিতা করেছে আইফার্মার; যেখানে প্রতি মাসে প্রায় ১২ হাজার টন উৎপাদিত পণ্য কৃষকদের কাছ থেকে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কৃষকদের ফলন ধরে রাখতে ও মান বাড়াতে হলে খুব দ্রুত প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে আইফার্মার দেড় লাখেরও বেশি কৃষকের কাছে সরাসরি পৌঁছাতে ৭০০-রও বেশি টাচপয়েন্টের সমন্বয়ে উপাত্ত ও প্রযুক্তি-নির্ভর মডেল ‘আইফার্মার সেন্টার’ নিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে আইফার্মারের সিইও ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহাদ ইফাজ বলেন, “বিগত বছরগুলোতে আইফার্মার সেন্টারের মাধ্যমে আমাদের সকল সেবা একত্রিত করার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া সহ প্রায় সকল কাজই আমরা নিপুণভবে গুছিয়ে এনেছি। ডাটা-নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এখন টেকনোলজি ও ডেটা স্টেকের ওপর কাজ করছি আমরা।”
বাংলাদেশের ৭ম প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইফার্মারে বিনিয়োগ করলো রেজর ক্যাপিটাল। এ বিষয়ে রেজর ক্যাপিটালের ম্যানেজিং পার্টনার আফশিন মোয়াঈদ বলেন, “বাংলাদেশের কৃষিখাত নানা রকম প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। দেশের প্রথমদিককার কৃষিপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইফার্মারের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এই খাতের পরিবর্তন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপযোগী ট্রেন্ড নির্মাণে সহায়ক হবে।
আইফার্মারের লক্ষ্যপূরণে সহযোগিতা করার সুযোগ পেয়ে আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত।” খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org