দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই ব্যক্তিগত কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কাজে ল্যাপটপে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ছবি কিংবা ভিডিও সংরক্ষণ করেন।

ল্যাপটপে গোপনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারিও করতে থাকে হ্যাকাররা। ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার সংক্রমণ হয়েছে কি-না, তার কয়েকটি লক্ষণ জেনে নিন।
ল্যাপটপের গতি হঠাৎ করে কমে যাওয়া
ল্যাপটপ হঠাৎ ধীরগতিতে কাজ করছে কিংবা চালু হতে সময় নিচ্ছে, এটি হতে পারে ম্যালওয়্যার থাকার অন্যতম একটি লক্ষণ। ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ল্যাপটপের প্রসেসিং শক্তি ব্যবহার করে দূরে থাকা হ্যাকারদের কাছে তথ্য পাচারও করে থাকে, যে কারণে ল্যাপটপের কাজের গতিও বেশির ভাগ সময় কমে যায়।
ঘনঘন অচেনা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন কিংবা পপ-আপ দেখা
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় বারবার অচেনা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন কিংবা পপ-আপ দেখা গেলেও সতর্ক হতে হবে। এটি সাধারণত ‘অ্যাডওয়্যার’ সংক্রমণেরই লক্ষণ, যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই বিজ্ঞাপন দেখায় ও অনেক ক্ষেত্রেই তথ্য চুরির পথও তৈরি করে।
ব্রাউজারের হোমপেজ অথবা সার্চ ইঞ্জিন পরিবর্তন
নিজের অজান্তেই ব্রাউজারের হোমপেজ, সার্চ ইঞ্জিন কিংবা এক্সটেনশন পরিবর্তন হয়ে গেলে আপনাকে বুঝতে হবে ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার গোপনে ব্রাউজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যবহারকারীর সার্চ তথ্য জানার পাশাপাশি অন্য ওয়েবসাইটও তখন চালু করতে বাধ্য করে থাকে।
ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হওয়া
ল্যাপটপের ফ্যান ক্রমাগত ঘোরা কিংবা ল্যাপটপ অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে গেলেই আপনাকে সতর্ক হতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর অজান্তেই ল্যাপটপে চালু থেকে নজরদারি করার কারণে প্রসেসরে বাড়তি চাপ তৈরি হয়, যে কারণে ল্যাপটপ অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে যায়।
অকার্যকর হয় অ্যান্টিভাইরাস বা সিকিউরিটি সফটওয়্যার
ক্ষতিকর সফটওয়্যার, ম্যালওয়্যার এবং অনলাইন ঝুঁকি হতে ল্যাপটপকে সুরক্ষিত রাখতে অনেকেই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করেন। তবে শক্তিশালী বেশ কিছু ম্যালওয়্যার অ্যান্টিভাইরাসের চোখ ফাঁকি দিয়ে ল্যাপটপেও প্রবেশ করতে পারে। শুধু তাই নয়, অ্যান্টিভাইরাসের কার্যক্রমও তখন নিষ্ক্রিয় করে দেয়। তাই ল্যাপটপে থাকা অ্যান্টিভাইরাস হঠাৎ বন্ধ কিংবা চালু না হলে বুঝতে হবে যে, আপনার ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার রয়েছে।
অপরিচিত সফটওয়্যার ইনস্টল
ল্যাপটপে অপরিচিত সফটওয়্যারের উপস্থিতিই মূলত ম্যালওয়্যার সংক্রমণের অন্যতম একটি লক্ষণ। তাই প্রথমেই ল্যাপটপে থাকা সফটওয়্যারের তালিকাও যাচাই করতে হবে। একাধিক অপরিচিত সফটওয়্যার থাকলেই বুঝতে হবে আপনার ল্যাপটপে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করেছে।
হঠাৎ করে ফাইল হারিয়ে যাওয়া
দরকারি ফাইল হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়া কিংবা খুলতে গেলে ‘লক’ বার্তা দেখানো ম্যালওয়্যার সংক্রমণেরই লক্ষণ। এটি র্যানসমওয়্যারের কাজও হতে পারে। এই ধরনের ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর ফাইল এনক্রিপ্ট করে ফেলে ও তা ফেরত পেতে চাইলে অর্থ দাবি করে। তথ্যসূত্র: টেকলুসিভ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org