দি ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ প্রতি সপ্তাহের মতো আজও আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- আজ রয়েছে ডিমের ভিতরে ডিম, জলের নিচে ২২ মিনিটসহ কয়েকটি আজব খবর।
ডিমের ভিতরে ডিম
বিচিত্র এই পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত অদ্ভুত ধরনের ঘটনা ঘটছে। সমপ্রতি তেমনি একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে আমেরিকার টেক্সাসে। সেখানে কুকি স্মিথ নামে এক মহিলার মুরগির ডিমের মধ্যে আরেকটি পরিপূর্ণ ডিম পাওয়া গেছে। টেক্সাসের এবিলিনিতে বসবাসকারী কুকি স্মিথের ৩টি মুরগির মধ্যে একটি অস্বাভাবিক বড় রকমের ডিম দেয়। যা স্বাভাবিক ডিমের চেয়ে ৩ ইঞ্চি লম্বা এবং একটু ভারি। এরপর ডিমটি ভাঙলে তার ভেতর থেকে আরেকটি পরিপূর্ণ ডিম বেরিয়ে আসে। তবে এই ডিমটির চামড়া ছিল একটু পাতলা। আশ্চর্য এই ঘটনাটি পরদিন স্থানীয় একটি পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হিস্টোরি মিউজিয়াম এই আশ্চর্য ডিমটি নিয়ে একটি ভিডিও চিত্রও প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, যে কারণেই হোক না কেন এই ঘটনাটি আশ্চর্যজনক। তবে এই বিষয়ে প্রাণী চিকিৎসকরা কোন তথ্য দিতে পারেননি।
জলের নিচে ২২ মিনিট
জলের নিচে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে কে কতক্ষণ থাকতে পারে তা নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। এ বিষয়টি বড়দের চেয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের বেশি ভাবায়। গ্রামে যাদের শৈবব কেটেছে তারা সবাই পানির নিচে ডুব দিয়ে থাকা খেলার সঙ্গে পরিচিত। তাছাড়া এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দেশের মানুষের মাতামাতিও কম নয়। সমপ্রতি জলের নিচে সর্বোচ্চ সময় দম বন্ধ করে থাকার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন জার্মান নাগরিক টম সিটাস। চীনে এক প্রতিযোগিতায় সিটাম ব্রাজিলিয়ান রিকার্ডো বাইয়ার রেকর্ডটি ভাঙেন। এর আগে ব্রাজিলিয়ান রিকার্ডো বাইয়া জলের নিচে দম ২০ মিনিট বন্ধ করে রেখে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন। আর সিটাম মোট ২২ মিনিট ২২ সেকেন্ড জলের নিচে দম বন্ধ রেখে এই নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। তার ডুবে থাকা জলের তাপমাত্রা এসময় ছিল ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ডাক্তাররা তাদের ডুবে থাকার সময় থেকেই গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন উভয়য়ের হূদযন্ত্রের কর্মকাণ্ডের উপর। জানা যায়, টম পেশায় একজন স্বাধীন ডুবুরি। চীনে তিনি এবং রিকার্ডো উভয়ই টুর্নামেন্টে অংশ নেন। তারা নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণের জন্য দুটি জলভর্তি ট্যাংকে ডুবে দেন। শেষ পর্যন্ত রিকার্ডোকে হারিয়ে টমই জিতে নেন জলের নিচে দম বন্ধ করে রাখার বিশ্ব রেকর্ডটি। তার এই অসাধারণ গুণের ব্যাপারে সিটাস জানান, জলে ডুবে দম বন্ধ করে রাখার খেলায় অংশ নেয়ার আগে তিনি ৫ ঘণ্টা কোন খাবার গ্রহণ করেন না। তারপর তিনি ডুব দেয়ার আগে তার ফুসফুসে যতটা সম্ভব টেনে ভর্তি করে নেন বিশুদ্ধ অক্সিজেন। এভাবে বেশ কয়েকবার শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে তিনি ডুব দেয়ার অনুশীলন করে নেন। এরআগেও সিটাস বেশ কয়েকবার জলের নিচে ডুবে দমবন্ধ করে রাখার রেকর্ড করেছিলেন। সর্বশেষ তার রেকর্ড ছিল ২০০৭ সালে জলের নিচে ১৫ মিনিট ২ সেকেন্ড দম বন্ধ রেখে রেকর্ড করেছিলেন।
সাত রঙের পৃথিবী
সাত রঙের পৃথিবী (7 Colored earth) একটি জায়গার নাম। এটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিখ্যাত দ্বীপ মরিসাসে অবস্থিত। জায়গাটি মরিসাসের ক্যামারেল নামক স্থানের Bel Ombre Sugar Estate-এর পাশেই অবস্থিত। অদ্ভুত রকম সৌন্দর্য এ জায়গাটির। সাত বর্ণে বর্ণিত বলেই জায়গাটির এমন নাম হয়েছে। জায়গাটির আয়তন ৭ হাজার ৫০০ বর্গ মাইল বা ১২ হাজার ৭০ বর্গ কিলোমিটারের বেশি। স্থানটির চারপাশ ঘিরে রয়েছে সবুজ বনভূমি। মূলত এটি একটি রঙিন পাথুরে ভূমি। পুরো ভূমি বিভিন্ন রঙে রাঙা। লাল, নীল, সবুজ, বেগুনি, গোলাপি, হলুদ এবং ধূসর রঙে রঙিন হয়ে থাকে এ আশ্চর্য ভূমি। এ ভূমিটি আবহাওয়ার কারণে ও বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে দৃশ্যমান হয়। যেমন রৌদ্রজ্জ্বল ও মেঘপূর্ণ আবহাওয়ায় বা পড়ন্ত বৃষ্টিতে স্থানটি বৈচিত্র্যময় রূপ ধারণ করে। আবার সকাল, দুপুর ও বিকালবেলায় একে বিভিন্ন রকম দেখা যায়। তাই অনেক বছর আগ থেকেই সমুদ্রপ্রিয় পর্যটকদের কাছে মরিসাসের সাত রঙের পৃথিবী নামক স্থানটি আর্কষণীয় স্পট হয়ে আছে। বিজ্ঞানীরা এ বিস্ময়কর ভৌগলিক স্থানটির গঠন বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছেন, কোন এক সময়ে আগ্নেয়শিলা দিয়ে এ ভূমির সৃষ্টি হয়েছিল। বহুবছর আগে আগ্নেয়গিরি থেকে উত্থিত গলিত লাভা স্তরে স্তরে সন্নিবেশিত হয়ে আস্তে আস্তে শীতল হয় এবং এ আশ্চর্যময় স্থানের তৈরি হয়। পৃথিবী অভ্যন্তরের গলিত লাভাগুলো বিভিন্ন পদার্থের সমন্বয়ে আগ্নেয়শিলা গঠিত হয়েছিল বলে এই ভূমির এ শিলাগুলো বিভিন্ন রূপের ও বৈচিত্র্যময়। পরবর্তী সময় যুগের পর যুগ এ ঠাণ্ডা আগ্নেয়শিলাগুলো পরিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন রঙের বেলে পাথরে পরিণত হয়। এরপর বছরের পর বছর সেই সৃষ্টি থেকে এখন পর্যন্ত এ রঙিন বেলে পাথরের ওপর বৃষ্টিপাত হতে হতে শিলাগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয় ও আকার পরিবর্তন করে। যা বর্তমানে আশ্চর্য রঙিন ঢেউ খেলানো মরুভূমিতে রূপদান করেছে। আর এর চারপাশের সবুজ বনভূমি জায়গাটিকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে। তাই মরিসাসের প্রাকৃতিক রূপ ও নীল সাগর দেখতে যাওয়া পর্যটকরা অদ্ভুত সুন্দর এ সাত রঙের পৃথিবী নামক স্থানটিও দেখে আসেন।