দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীর মজুদ জ্বালানির স্বল্পতার কারণে বিজ্ঞানীরা খুজছেন বিকল্প জ্বালানী ব্যবস্থা। বেশ কয়েক বছর যাবত বিকল্প জ্বালানী ব্যবস্থা হিসেবে সৌর বিদ্যুৎতের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এবার সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে চলে এমন একটি বিমান তৈরি করেছে সুইজারল্যান্ড।
“সোলার ইম্পালস ২” এই বিমানটি আকাশে ভ্রমণ করে সৌরবিদ্যুৎতের সাহায্যে যার মাধ্যমে পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করা সম্ভব। এর দুপাশের ডানার ব্যাপ্তি প্রায় ৭২ মিটার যা একটি বোয়িং ৭৪৭ জাম্বো বিমানের চেয়েও বেশি। ওজন প্রায় ২.৩ মেট্রিক টন, ওজনের বেশি হওয়ার কারণে এর গতিবেগ কম ঘন্টায় প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। যার ফলে পুরো পৃথিবী পরিভ্রমণ করতে এর সময় লাগবে পাঁচদিনের মতো।
তাত্ত্বিক মতে এটি আবিরাম আকাশে ভ্রমণ করতে পারবে। কারণ ভ্রমণের জন্য এর প্রয়োজনীয় জ্বালানী আসবে সূর্য থেকে ফলে জ্বালানীর জন্য একে নিচে নামতে হবে না। কিন্তু যাত্রীবাহী বিমানের ক্ষেত্রে অ্যাভিয়েশন নিয়ম অনুসারে এটি এই ধরণের পদক্ষেপের কথা চিন্তা করছে না। গুগল গত বছর দ্রুতগতির ইন্টারনেট ছড়িয়ে জন্য এই ধরণের অবিরাম আকাশে পরিভ্রমণরত বিমানের কথা চিন্তা করেছিল।
এর ভেতরের ব্যবস্থাপনা বেশ নজরকাড়ার মতো এতে রয়েছে বিজনেস ক্লাস আসন ব্যবস্থা। প্রতিটি আসনের সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। অন্যান্য বিমানের মতো বাকী সব সুযোগ সুবিধাতো রয়েছেই। সারাবিশ্বের মোট কার্বন ডাই অক্সাইডের তিন শতাংশ আসে বিমানের জ্বালানী থেকে, এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের উষ্ণতা হ্রাসের জন্য বিকল্প জ্বালানীর মাধ্যমে বিমান চালনার ক্ষেত্রে “সোলার ইম্পালস ২” পথ প্রদর্শক হয়ে থাকবে। সবুজ অ্যাভিয়েশনের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন দিগন্ত। সোলার ইম্পালসের ব্যাটারী খুবই শক্তিশালী। বিমানের ডানায় জুড়ে রয়েছে প্রায় ১৭২০০ সোলার সেল। এখান থেকে প্রাপ্ত সৌরবিদ্যুৎ জ্বালানী ব্যবহার করা হয় বিমানের ইঞ্জিনে।
আগামী বছর এই বিমানের প্রাথমিক যাত্রা শুরু হবে। এটি পৃথিবী পরিক্রমার মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু করবে। হিসেব অনুযায়ী এই পরিক্রমায় সময় লাগবে প্রায় ২০ দিন। তবে চলতি বছরের মে জুন মাসে এটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করবে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলো ব্যাত্র পার্কার এবং অ্যান্দ্রে বর্শবার্গ। এর আগে তারা তৈরি করেছিলেন সোলার ইম্পালস ১। এর অনেক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় একে পরিত্যক্ত করা হয়, নতুন এই সোলার ইম্পালসে পুরোনো ত্রুটিগুলো দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার বিমানটি সূর্যের আলোতে নির্ভর করে তার প্রথম আন্তর্জাতিক যাত্রার শুভ সূচনা করে। বিমানটি ভূমি থেকে ৩৬০০ মিটার উপর দিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার বেগে সুইজারল্যান্ড থেকে ব্রাসেলস যায়।
তথ্যসূত্রঃ ডয়চে ভেলে