দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। আজ শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০১৪ খৃস্টাব্দ, ২৪ শ্রাবণ ১৪২১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৩৫ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে মসজিদটি দেখতে পাচ্ছেন এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছোট সোনা মসজিদ। এটি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। অত্যন্ত সৌন্দর্য্যপূর্ণ এই মসজিদটি দেখলে আপনিও অভিভূত হবেন।
রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত এই ছোট সোনা মসজিদ বাংলাদেশের প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম মসজিদ। মসজিদে প্রাপ্ত একটি শিলালিপি হতে জানা যায়, সুলতান আলা-উদ্দীন শাহের শাসনামলে ওয়ালী মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তি প্রাচীন গৌড় নগরীর উপকণ্ঠে অবস্থিত ফিরোজপুর নামক গ্রামে এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। আর তাই অনেকের কাছেই এটির অন্য এক পরিচয় ছিল ‘গৌরের রত্ন’ হিসেবে। যদিও মসজিদটির বাইরের সোনালি রঙের আস্তরণটিই মূলত এটিকে সোনা মসজিদ নামে পরিচিত করে তোলে।
জানা যায়, প্রাচীন গৌড়ে সুলতান নুসরত শাহের তৈরি অপর একটি মসজিদও সোনা মসজিদ নামে পরিচিতি থাকায় স্থানীয়রা একে ছোট সোনা মসজিদ নামে অভিহিত করেন। মসজিদটি উত্তর ও দক্ষিণে ৮২ ফুট লম্বা এবং পূর্ব ও পশ্চিমে ৫২.৫ ফুট চওড়া। আর উচ্চতায় প্রায় ২০ ফুট। এই মসজিদের দেওয়ালগুলো প্রায় ৬ ফুট পুরু এবং এটি তৈরিতে মাঝে ইট ও ভেতরে-বাইরে পাথরের ব্যবহার হয়েছে। আর মসজিদের খিলান এবং গম্বুজগুলো তৈরিতে শুধুই ইটের ব্যবহার হয়েছে। মসজিদের চারকোণে চারটি বুরুজও আছে। এটির ভূমি নকশা অষ্টকোণাকার এবং বুরুজগুলোতে ধাপে ধাপে বলয়ের কাজ রয়ছে। মসজিদের পূর্ব দিকের দেয়ালে ৫টি খিলানযুক্ত দরজা রয়েছে। খিলানগুলো বহুভাগে বিভক্ত ও নানা অলংকরণে সমৃদ্ধ। উত্তর এবং দক্ষিণ দিকের দেয়ালেও ৩টি করে দরজা রয়েছে। উত্তর দেওয়ালের সর্ব-পশ্চিমের দরজাটির জায়গা হতে একটি সিঁড়ি মসজিদের অভ্যন্তরে উত্তর-পশ্চিম দিকে ২য় তলায় অবস্থিত একটি বিশেষ কামরায় উঠে গেছে। মনে করা হয়, পাথরের স্তম্ভের উপর অবস্থিত এই কামরাটিই জেনানা-মহল কিংবা সুলতান অথবা শাসনকর্তাদের নিরাপদে নামাজ আদায়ের জন্য ব্যবহৃত হতো। এই মসজিদটির অভ্যন্তরভাগ কালো ব্যাসাল্টের ৮টি স্তম্ভ দ্বারা উত্তর-দক্ষিণে ৩টি আইল এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৫টি সারিতে বিভক্ত। আবার পূর্ব দিকের দেওয়ালের ৫টি দরজা বরাবর মসজিদের অভ্যন্তরে রয়েছে ৫টি অর্ধ-বৃত্তাকার নকশার মিহরাব। এদের মধ্যে মাঝেরটি আকারে বেশ বড় ও প্রতিটির মিহরাবেই পাথরের ওপর অলংকরণ রয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের ৮টি স্তম্ভ এবং চারপাশের দেয়ালের উপর তৈরি হয়েছে মসজিদের ১৫টি গম্বুজ।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখতে এবং নামাজ পড়তে আপনি কোন এক শুক্রবারে গিয়ে হাজির হতে পারেন। এমন কারুকার্য খচিত সৌন্দর্য্যমণ্ডিত মসজিদ দেখে আপনার মন ভরে যাবে।
ছবি: http://sobuj-bangla.blogspot.com এবং তথ্য দৈনিক ইত্তেফাক এর সৌজন্যে।