দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিজের ছেড়া মাথার খুলি নিয়ে নিজেই ছুটে এলেন হাসপাতালে। এমন লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের তামিল নাডু প্রদেশের কোয়েম্বাতুরের সেলভাপুরমে।
এমন ঘটনায় হাসপাতাল কর্মীরা হতবাক। হাসপাতাল কর্মীরা দেখলেন, সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে, এই অবস্থা নিয়ে এক নারী নিজেই ছুটতে ছুটতে এসে হাজির হলেন হাসপাতালে। আবার ওই নারীর পেছনেই তার ছেড়া বেণী নিয়ে ঢুকতে দেখা গেলো আরও কয়েকজনকে। পরে জানা গেলো, নারীর মাথার পেছনের খুলির অংশ বেণীসহ ছিঁড়ে গেছে। হাসপাতালে কর্মীরা এমন দৃশ্য দেখে তো সংজ্ঞা হারানোর মতো অবস্থা!
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দ্রুত ওই নারীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করলেন। জটিল প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে খুলির পেছনে আগের মতোই জুড়ে দিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন চিকিৎসকরাও।
ভারতের তামিল নাডু প্রদেশের কোয়েম্বাতুরের সেলভাপুরমে একটি গয়না তৈরির এক সংস্থায় কাজ করতেন ২৬ বছর বয়সী অশ্বিনী নামের ওই নারী। কোনো একটি বিশেষ গয়না বানাতে গিয়েই ঘটে এই বিপত্তি। প্রতিদিনের মতোই লম্বা বেণী দুলিয়ে কাজ করছিলেন অশ্বিনী। কাজ করার এক পর্যায়ে গয়না তৈরির যন্ত্রে গলানো সোনা ঢালার সময় সেই যন্ত্রেই ঢুকে যায় তার বেণী। এরপর ওই যন্ত্র অশ্বিনী’র বেণী আঁকড়ে ধরে। এক ঝটকায় তার ভ্রুর উপর থেকে ঘাড় পর্যন্ত চুল এবং মাথার তালুর অংশ ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসে। অসহ্য ব্যাথা নিয়ে অশ্বিনী নিজেই ছুটে আসেন ওই হাসপাতালে। ইতিমধ্যে তার সহকর্মীরাও যন্ত্র হতে কোনোক্রমে বেণী ছাড়িয়ে হাসপাতালে পৌঁছেন।
প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে এসেই জ্ঞান হারান অশ্বিনী। সঙ্গে সঙ্গে তাকে রক্ত ও ফ্লুইড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য চিকিৎসকদের বেশ বেগ পেতে হয়। হাসপাতালের কর্মীরা যেমন ভড়কে যান তেমনি চিকিৎকরাও অশ্বিনীকে সারিয়ে তুলতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়, কীভাবে ছেঁড়া অংশ জোড়া লাগানো যায় তা নিয়েই চলে চুলচেডরা বিশ্লেষণ। চিকিৎসরা দেখেন, খুলির সঙ্গে মাথার তালুর সংযোগ রয়েছে এমন ৩টি শিরা তখনও অক্ষত রয়েছে। সেগুলোর মাধ্যমেই ছিঁড়ে যাওয়া মাথার তালু হতে সমস্ত চুল কেটে, তা খুলির ওপর বসিয়ে জুড়ে দেওয়া হয় শিরাগুলোকে। এই দুঃসাধ্য অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকরা সফল হয়েছেন।