দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েকদিন ধরে তনুকে নিয়ে তেমন একটা লেখালেখি চোখে পড়ছে না। তাহলে কী তনুর কথা সবাই কি ভুলে যাচ্ছে? তনুর মতো এমন একটি মেয়ের কথা কেও কখনও ভুলতে পারে না।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। এর পরের ঘটনা দুনিয়ার সব মানুষ দেখেছে। সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড়। ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় কীভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন সবাই।
বর্তমান সময়ের মেয়েদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও অত্যন্ত নরম স্বভাবের মেয়ে ছিল সোহাগী জাহান তনু। বাসা থেকে বের হতেন স্কার্ফে মাথা ঢেকে। কেবলমাত্র তার মুখটুকু দেখা যেতো। এ যাবতকাল তনু হত্যাকাণ্ডের পর ফেসবুক কিংবা পারিবারিক সূত্র হতে তার যে সব ছবি পাওয়া গেছে সবই ছিল আব্রু অবস্থায়। খোলামেলা কোনো ছবি এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। অর্থাৎ তনু বাইরে বের হবার সময় গায়ের কাপড় ঢাকা অবস্থায় বের হতো। শুধুমাত্র মুখমণ্ডলটুকু দেখা যেতো।
দেশজুড়ে চরম প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ফলশ্রুতিতে প্রশাসন কিছুটা নড়ে ওঠে। শুরু হয় তদন্ত। সিআইডিকে দেওয়া হয় তদন্তের ভার। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ফল আসেনি।
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মতোই তনু হত্যাকাণ্ডের ফলাফলও তাই হতে চলেছে। অন্তত অবস্থাদৃষ্টে তাই মনে হচ্ছে।
সেই চিরন্তনি বাণী আবারও কি উচ্চারণ করা লাগবে? ‘বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কাঁদে’। আমাদের দেশে একের পর এক নির্মমতম ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সেসব হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হচ্ছে না। বিচার না হওয়া এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় একের পর এক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।
এদিকে সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার আবেদন জানিয়ে দায়ের করা একটি রিট আজ (সোমবার) কার্যতালিকা হতে বাদ (আউট অব লিস্ট) দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি নাঈমা হায়দার এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন একটি ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
রিটকারী আইনজীবী এডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ সাংবাদিকদের বলেছেন, আদালত বলেছে, তনু হত্যার বিষয়ে দায়ের করা মামলার তদন্ত বর্তমানে চলমান। তাই রিট আবেদনটি কার্যতালিকা হতে বাদ দেওয়া হলো। তিনি আরও জানান, সোহাগী জাহান তনু হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং জড়িতদের গ্রেফতারের প্রার্থনা জানিয়ে হাইকোর্টে গত ৩ এপ্রিল রিট পিটিশনটি দায়ের করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে বাসা হতে মাত্র ২০০ গজ দূরে একটি ঝোঁপের মধ্যে তনুর লাশ পাওয়া যায়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অর্নাসের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু কুমিল্লা ময়নামতি সেনানিবাসের ভেতরে অলিপুর এলাকায় সপরিবারে বসবাস করতেন। তার বাবা ইয়ার হোসেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের একজন কর্মচারী।