দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী হাফেজ মুহাম্মদ তরিকুল ইসলাম ১০৩টি দেশের মধ্যে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। হাফেজ তরিকুল ইসলাম আমাদের দেশের জন্য গর্ব।
গত বৃহস্পতিবার দুবাইতে অনুষ্ঠিত ২১ তম দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেন বাংলাদেশী হাফেজ তরিকুল ইসলাম। এর পূর্বে গ্রুপ পর্বের প্রতিযোগিতার সময়েই সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন তরিকুল। সুললিত কুরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ করেন সকলকে।
পুরস্কার গ্রহণ করছেন তরিকুল ইসলাম
দুবাইয়ের আল মামজারে দুবাই কালচারাল ও সায়েন্টিফিক অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন দুবাই প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব শেখ আহমাদ বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম।
প্রতিযোগিতায় ১০৩টি দেশের প্রতিযোগিকে পরাজিত করে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন হাফেজ তরিকুল ইসলাম। এদিকে পুরস্কার ঘোষণার পর হাফেজ তরিকুলের সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য আরব তরুণ ও যুবকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দিপনা লক্ষ্য করা যায়। সেলফি তোলার জন্য রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়।
১৩ বছর বয়সী তরিকুল কেবলমাত্র তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায়ই প্রথম হননি। তিনি ‘সুরেলা কণ্ঠ’ ক্যাটাগরিতেও চতুর্থ হয়েছেন।
বিজয়ী হিসেবে তরিকুল পেয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ দিরহাম অর্থ পুরস্কার। বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতাতে তরিকুল শ্রেষ্ঠ হয়ে দুবাইতে যায় সে। দুবাই অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ১০৩ জন প্রতিযোগীর মধ্যে আমেরিকান প্রতিযোগি হুজাইফাহ সিদ্দিকীকে পরাজিত করে বিজয়ী হওয়ার এই গৌরব অর্জন করে তরিকুল ইসলাম।
গালফ নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হাফেজ তরিকুল ইসলাম বলেছেন, কুরআন নিয়ে আমি আরও পড়াশুনা করতে চাই। মদিনার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে চাই। শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে কুরআনের বার্তা মানুষের মাঝে পোঁছে দিতে আমি ভবিষ্যতে আরও কাজ করতে চাই।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত মারকাজুত তাহফিল ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার কৃতি ছাত্র হাফেজ তরিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার মালিগাঁও গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মো. আবু বকর সিদ্দিক। তিনি ঢাকায় একটি মসজিদের ইমাম।
মারকাজুত তাহফিল ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার প্রিন্সিপাল বিশ্বজয়ী তরিকুলের উস্তাদ হাফেজ মাওলানা নেছার আহমদ আন নাছিরী বলেছেন, তরিকুল মাত্র এক বছরে সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করেছে। তিনি বলেছেন, তার এই অর্জন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছে।
ওই মাদ্রাসার প্রিরন্সিপাল মাওলানা নাছিরী বলেছেন, হাফেজ তরিকুলের বিশ্বজয়ে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে আমি আনন্দিত ও আপ্লুত।
তবে বিশ্বজয়ী এই হাফেজকে কোনো সর্ম্বধনা দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। রাজধানী ঢাকার এক মসজিদের ঈমাম বলেছেন, কোনো বাংলাদেশী নাগরিক বিদেশে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখলে যেমন সেঞ্চুরী করলে বা কোনো অবদান রাখলে তাকে ব্যাপক সম্বর্ধনা দেওয়া হয়, কিন্তু ১০৩ দেশের মধ্যে বিজয়ী হওয়া এই কিশোর হাফেজকে কতোটা সম্মান দেওয়া হবে সেটিই দেখার বিষয়। তরিকুলের বিশ্বজয়ের এই খবরটিও দেশীয় সংবাদ মাধ্যমে ঠিক সেইভাবে প্রচার করা হয়নি বলেও আক্ষেপ করা হয়।