দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (এআরএসএ) ৬ বিদ্রোহীকে ধরিয়ে দিয়েছে রোহিঙ্গারা- এমন দাবি করেছে মিয়ানমার সরকার।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, ওই ৬জন ২৫ আগস্ট পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কিছু তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালানোর ঘটনায় জড়িত থাকারও দাবি করা হচ্ছে।
গত ২৫ আগস্টের হামলার ঘটনার পর হতে ৩ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য ছেড়ে প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের ৬০টি গ্রাম। কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছে এসব ঘটনায়। সহিংসতার ঘটনায় রোহিঙ্গা ও সরকার একে অন্যদের ওপর দোষারোপ করে আসছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধানের কার্যালয় হতে তাদের ফেসবুক পেজে জানানো হয়, সোমবার মংডোর পার্শ্ববর্তী কা নাইন তান গ্রাম হতে সন্দেহভাজন ৬ জন বিদ্রোহীকে রোহিঙ্গারা আটক করে।
উল্লেখ্য যে, বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাঙালি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দাবি করা হয়, তারা বাংলাদেশ হতে এসে রাখাইনে বসতি স্থাপন করেছে। তবে রোহিঙ্গারা শত শত বছর ধরে বংশ পরম্পরায় সেখানেই বসবাস করে আসছেন। ইতিহাসে তার প্রমাণও মেলে।
মিয়ানমার সরকার গত সপ্তাহে জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৪শ’ রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে। তাদের অধিকাংশকে বিদ্রোহী হিসেবে উল্লেখ করেছে মিয়ানমার সরকার!
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসার সময় রোহিঙ্গারা নিজেদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে চলে আসছে! মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই দাবিকে হাস্যকার হিসেবেই দেখছে সবাই। মায়ানমার বলছে, ১৮ জন সাংবাদিকের একটি দলকে সেদেশে শর্ত সাপেক্ষে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢুকতে দিয়েছিল।
বিবিসির সাংবাদিক জোনাথন সেই দলে ছিলেন। জোনাথন জানিয়েছেন, ওই ঘরবাড়িতে মুসলমানরা আগুন দিয়েছে বলে দাবি করা হলেও, প্রকৃতপক্ষে ভিডিওতে আগুন দিতে দেখতে পাওয়া লোকজন অাসলে হিন্দু। ভিডিওটা যে ভুয়া সেটা নিশ্চিত হয়ে বিবিসিতে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়।
তাছাড়া ১৮ জন সাংবাদিকের ওই দলের সামনেই মিয়ানমারের একটি গ্রামে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মুসলমানদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার পর বৌদ্ধ ধর্মের ওই অনুসারীরা লুটপাট করে।
অপরদিকে জাতিসংঘ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের এই মর্মষ্পর্ষী ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
আজ (বুধবার) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান রাখাইন প্রদেশের সহিংসতার ঘটনাকে জাতিগত নিধন বলে সতর্ক করার পরই জরুরি বৈঠক ডেকেছে সংস্থাটি।