ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খামার আছে কিন্তু ছাগল নেই, কর্মচারির বেতন আছে কিন্তু কর্মচারি নেই। এমনই কাগুজে-কলমে রয়েছে সম্ভবত দেশের একমাত্র ছাগল ব্রিডিং খামার।
প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে তোলা মেহেরপুর জেলা শহরের উপকণ্ঠে কুষ্টিয়া সড়কে জাপান সরকারের অর্থ সহযোগিতায় ছাগল ব্রিডিং খামার প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে খামারটির সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে আছে পল্লী উন্নয়ন সংস্থা (বিআরডিবি)। উন্নত জাতের ছাগলের বংশ বিস্তারের জন্য স্থাপিত ওই খামারটিতে কাগজ-কলমে ব্রিডিং খামার হলেও এখন ছাগলের বদলে আছে জ্বালানি। খামারটি এখন বহিরাগতরা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। আর ঘরভাড়ার টাকা ও খামারের সম্পত্তি লিজ দিয়ে তার পুরোটাই আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, খামারের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান ভবনের ওপর তলায় দুটি রুম নিয়ে বসবাস করছেন। নিচতলার চারটি রুম ভাড়া দেয়া হয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্টাফ আবুুল কালাম ও খোরশেদ হোসেনকে। খামারে কোন ছাগল না থাকলেও ছাগল দেখাশোনার জন্য শুকুর আলী নামে একজন কর্মচারী রয়েছে। জানা যায়, তিনি খামারে কাজ না করে বিভিন্ন জায়গায় শ্রম বিক্রি করলেও মাস শেষে বেতন নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া খামারের বাউন্ডারির বাইরে খামারের ছাগলের জন্য ৮ বিঘা চারণভূমি দীর্ঘ মেয়াদের জন্য লিজ দেয়া হয়েছে। খামারের নিকটবর্তী গোপালপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী তোফাজ্জেল হোসেন ওই জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করছেন। পল্লী উন্নয়ন পরিচালিত এ খামারের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তাদের সভাপতি আবদুল মান্নান। তিনি ওইসব জমি লিজ দেন এবং ঘরভাড়া দিয়ে টাকা আদায় করেন। পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা তপন কুমার মণ্ডল জমি লিজ ও ঘরভাড়ার টাকা সংস্থার কোন হিসাবে জমা হয় না বলে স্বীকার করেছেন।
তাহলে বুঝুন! এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে ঘরে ঘরে উন্নত জাতের ছাগল পালন প্রকল্পগুলোর অবস্থা কি হবে তা ভাববার বিষয়। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ছাগল পালন প্রকল্পের তাহলে কি হবে? কারণ ঘরে ঘরে মহিলাদের ছাগল পালন করার ব্যাপারে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মহিলারা ঘরে বসে ছাগল পালনের মাধ্যমে স্বাবলম্বি হতে পারেন অনায়াসে। এক্ষেত্রে সরকার সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু উন্নত জাতের ছাগল না পেলে কিভাবে এগিয়ে যাবে এই ছাগল পালন প্রকল্পগুলো। সেটিই এখন সকলের চিন্তার বিষয়।