দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকআপম্যানের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী তমা মির্জা। কাজী হারুন অসুস্থতার জন্য ভিক্ষা করে জীবন যাপন করছেন।
গুণি এই মেকাবম্যান ‘অন্য জীবন’, ‘শঙ্খমালা’, ‘গোলাপী এখন ঢাকা’, ‘জীবন সংসার’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে পেয়েছেন নানা স্বীকৃতিও। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবিতে কাজের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
সেই পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকাআপম্যান হারুনের সংসার চলে এখন ভিক্ষে করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির ফরিদাবাদ বস্তিতে স্ত্রী মহুয়া আকতারকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। ৩টি বাড়িতে কাজ করে ঘর ভাড়া দেন স্ত্রী মহুয়া, অপরদিকে ভিক্ষা করে জীবনধারণের খরচ চালান কাজী হারুন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই মেকআপম্যানের ছবি ভাইরাল হয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সেই মেকআপম্যান খুবই অসুস্থ।
তার চোখে ছানি পড়েছে, যে কারণে তিনি চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি হারিয়েছেন কাজ। অর্থের অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারেন না। বাধ্য হয়ে পথে পথে ভিক্ষা করেন তিনি।
সংবাদ মাধ্যমের হৃদয়বিদারক এই বিষয়টি নজরে আসে চিত্রনায়িকা তমা মির্জার। তার এমন অবস্থা দেখে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র মেকআপম্যান সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তমা মির্জা। সেখানে তিনি নিশ্চিত করেন যে তাঁর চিকিৎসা করাবেন নিজ দায়িত্বে।
এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে তমা মির্জা বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির একজন গুণী মেকআপম্যান চোখে দেখতে পাচ্ছে না ও চিকিৎসাও করতে পারছেন না। যিনি এতো সুন্দর দৃষ্টি নিয়ে একদিন আমার মতো শিল্পীদের সাজিয়ে তুলেছেন পর্দায়, আজ তাঁর সেই চোখে দৃষ্টি নেই।
তিনি কাজ করতে পারছেন না। যদিও উনার কাছে আমার মেকআপ নেওয়ার কোনো সুযোগ হয়নি তারপরও আমার খুব খারাপ লেগেছে। নিউজটা দেখার পর আমি কিছুদিন অপেক্ষা করেছিলাম, কেও যদি উনার দায়িত্ব নেয়। পরে মেকআপম্যান সমিতিতে হক ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে জানি যে কেও তাঁর দায়িত্ব নেয়নি। আমি তখন উনার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে চেয়েছি।’
তমা আরও বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি উনার চোখের ছানি পড়েছে যার কারণে দেখতে পারছেন না। তাই আমি উনার চোখের অপারেশনটা করাতে চাই।
শুনেছি উনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলেন। চোখের অপারেশন করানোর পর যদি উনি বলেন যে উনার মাথার যে সমস্যা আছে সেটার জন্য আমি চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো। আমার নিজের যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে সেটা দিয়ে উনার চিকিৎসা করার চেষ্টা করবো।’
তমা মির্জা মনে করেন, ‘আমরা শিল্পীরা যারা কাজ করি তাদের প্রত্যেকের কাছেই কম-বেশি টাকা থাকে। সেখান থেকে কিছু দিয়ে যদি একজন শিল্পীর চিকিৎসা করা যায়, তাহলে আমি মনে করি তারাও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন, তারা কাজও করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকআপম্যানের কাহিনী দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দি ঢাকা টাইমস এ “জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকআপম্যান এখন ভিক্ষা করেন! [ভিডিও]” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।